গুল নাহার :::
পাহাড়সম সম্পদের মালিক দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) (ঢাকা সজেকা ২) উপপরিচালক মাহবুবুল আলম। তিনি ১৯৯৪ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে ৩য় শ্রেণির পরিদর্শক পদে যোগদান করেন। তার দুর্নীতি সামনে আসে দুদক, সজেকা চট্টগ্রাম-২ এ কর্মরত থাকাকালে। চট্টগ্রাম-২ এ ৪ বছরেরও অধিক রাম-রাজত্ব কায়েম করেন এই কর্মকর্তা। তিনি ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম-২ এর দায়িত্বে ছিলেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রাম-২ এ দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে দুদকের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ঘুষ বাণিজ্য, ইয়াবা ব্যবসা, হত্যা মামলার সাথে জড়িত থাকা, দখলদার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে। আর সেই অভিযোগটি ২০১৯ সালে দুদকের প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ ইউছুপ অনুসন্ধান শুরু করেন। মোহাম্মদ ইউছুপ হলেন দুদকের চট্টগ্রাম শাখার ডেস্কের পরিচালক। দুদকের এই পরিচালক দীর্ঘ ৪ বছর অনুসন্ধান শেষে ২০২৩ সালের ২৪ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলমের পক্ষে অভিযোগটি নিষ্পত্তির সুপারিশ করেন। যদিও ডেপুটেশনের মেয়াদ ৫ বছর অতিক্রান্ত এবং যুগ্ন সচিব হওয়ার পরও অদ্যাবধি মোহাম্মদ ইউছুপ দুদকের চট্টগ্রাম শাখার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে, কমিশনে মাহবুবুল আলমের পক্ষে মোহাম্মদ ইউসুপের দাখিলকৃত প্রতিবেদনের সার সংক্ষেপ সূত্রে জানা যায়, কমিশন সভার আলোচ্যসূচি নং-১৩ পর্যালোচনান্তে উল্লেখ রয়েছে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মুহ: মাহবুবুল আলম নিজ নামে দান ও ক্রয়সূত্রে ১৮টি দলিলমূলে অর্জিত ৪৫৫.২৬৮৪ শতক জমি এবং শেয়ারে ২০,০১,৩০০ টাকা বিনিয়োগসহ মোট ২৯,৮৩,৫৯১ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয়, ঢাকার শান্তিনগরে ৬৬,৮৭,২৯৬ টাকা মূল্যের ১৩৫১ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয়, গলাচিপা (পটুয়াখালী) আড়ৎপট্টির ৬টি দোকান ক্রয় ও গ্রামে ১,০৩,৫১,০০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি বিক্রয়, তার স্ত্রীর নামে ১৪টি দলিল মূলে মোট ৩৫৪.১২ শতক জমি ক্রয় ও শেয়ারে ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ, তার কণ্যার নামে ৭ টি দলিল মূলে ১৪৫.৮৮ শতক জমি, ২৬,০০,০০০ টাকার গাড়ি ক্রয় ও শেয়ারে ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগসহ অপরাপর সম্পত্তির তথ্য উল্লেখ করে তা অর্জনের সঠিকতা যাচাই করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কিন্তু কমিশন তদন্ত কর্মকর্তার অনুসন্ধান প্রতিবেদন নাকচ করে তা জাতীয় গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তদন্ত করার বিষয়ে একমত পোষণ করেছে। মোহাম্মদ ইউছুপ এর দাখিলকৃত প্রতিবেদনে দেখা যায়, মাহবুবুল আলম প্রায় ১০ একর জায়গা শুধু চট্টগ্রাম-২ এ কর্মরত থাকাকালীন সময়ে অর্জন করেছেন। দুদক যেখানে অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের কোন জমি বা ফ্ল্যাট ক্রয়ের পূর্বে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়া আবশ্যক মর্মে প্যারামিটার নির্ধারণ করেন, সেখানে দুদকের নিজস্ব কর্মকর্তা হয়ে ঐ ধরনের অনুমতি না নিয়েই সম্পদের পাহাড় গড়েছেন দুদকের এই কর্মকর্তা।
অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে, চট্টগ্রাম-২ এর কিছু নথি ও ঘটনা তদন্তে জানা যায় দুদকের উপপরিচালক মাহবুবুল আলম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত, চট্টগ্রাম এর স্পেশাল মামলা নং-১২/২০২১ এর ট্র্যাপ কেইসের জব্দকৃত ২,০৮,৫০০ টাকা, যা ২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর তারিখে সম্পন্ন। তার আলামত ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর কোর্টের আদেশ মূলে কাস্টডিতে প্রায় তিন বছর পর জমা প্রদান করেন। এর আগে নিজের কাছেই টাকাগুলো রাখেন মাহবুবুল আরম। অথচ একই বিষয় নিয়ে আলোচিত দুদক কর্মকর্তা শরীফকে চাকরিচ্যুত করার জন্য পয়েন্টকারে অভিযোগ ও শোকজ করা হয়েছিলো। কিন্তু দুদকের এই কর্মকর্তার ক্ষেত্রে কিছুই হয়নি।
এছাড়া আরও জানা যায়, মাহবুবুল আলম শরীফের ২০২০ সালের এসিআর (বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন) নীতিমালা ভঙ্গ করে ১ বছর পরে বিরুপ মন্তব্যকারে প্রদান করায় ২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর মাহবুবুল আলমকে শোকজ করলেও তার কিছুই হয়নি। এছাড়া চট্টগ্রামের আলোচিত এল এ শাখার চেইনম্যান নজরুলের মামলায় সাবেক জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের নাম উঠে আসে। তিনি আইও হওয়ার সুবাধে মেজবাহকে ম্যানেজ করে তার মেয়েকে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে চাকরি দেন। এমনকি ঐ ফাইল হতে এডিসি (এলএ) আমিরুল কায়সার ও ডিসি ইলিয়াছ হতে আর্থিক সুবিধা নেন। অদ্যাবধি যার সিএস দাখিল হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, মাহবুবুল আলমের মেয়ের বিয়ে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে ২০২০ সালের ১৪ই এপ্রিল করোনার মহামারির আগে হয়। তার মেয়ের বিয়েতে চট্টগ্রাম, ঢাকা ও কক্সবাজারসহ দেশের প্রত্যেকটি এলাকায় দুদকের অভিযুক্তদের দাওয়াত দিয়ে চাঁদাবাজি করা হয়। মাহবুবুল আলম তার মেয়েকে ন্যাশনাল হসপিটালে ৩০ লাখ টাকা দিয়ে পড়ালেখা করান।
সুত্রমতে, চট্টগ্রাম জেলার লোহাগাড়া উপজেলার সাবেক ওসি মো. শাহজাহানের থেকে দুই দফায় ৭২ লাখ টাকা তার বাসা শান্তিনগরে নিজের বাসায় নেন। টাকা নিয়ে উল্টো তার বিরুদ্ধে মামলাও করেন দুদকের এই কর্মকর্তা। টাকাগুলো সরাসরি দালাল মুবীন গ্রহণ করে উপরে তার বাসায় নিয়ে যান। মোট ১ কোটি ২০ লাখ টাকা না দেওয়ায় তিনি মামলা করেন। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ সংক্রান্তে আসামীদের সাথে যোগসাজশ করে ঘুষ বাণিজ্য করেছেন। এমনকি শরীফের দাখিল করা রিপোর্টের কপিও আসামীদেরকে প্রদান করেছেন মাহবুবুল আলম।
আরও অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএমএ সেক্রেটারি ডা. ফয়সাল ইকবালের বিরুদ্ধে শরীফ ৫টি মামলার সুপারিশ করেছিলেন এবং ২০২১ সালের ৩০জুন কমিশনে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মাহবুবুল আলম নিজের কাছে ৩ মাস রেখে ঐ বছরের আগস্টের ৬ ও ৭ তারিখে ফয়সাল ইকবালকে তার চেম্বারে নিয়ে এসে রিপোর্ট দেখিয়ে তদন্ত করান। চট্টগ্রাম-২ এ থাকাকালীন তার ফুফাতো ভাই মোখলেছের নামেই সিএন্ডএফ লাইসেন্স রয়েছে। ঐ লাইসেন্সের আড়ালে মাহবুবুল আলমই মূলত ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। কেজিডিসিএল এর সাবেক এমডি আইয়ুব খানের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় শরীফের সুপারিশ করা মামলা পেন্ডিং থাকাবস্থায় এখতিয়ার বর্হিভূতভাবে কেজিডিসিএল এর পদোন্নতির জালিয়াতি, জমি ক্রয় ও আবুল খায়ের গ্যাস সংযোগ জালিয়াতির পরিসমাপ্তির সুপারিশ করেছিলেন।
অপরদিকে মাহবুবুল আলমের দালাল মুবীনের মাধ্যমে ধলঘাট ইউনিয়নে বিশাল অর্থ বিনিয়োগ করেন, অধিগ্রহণের নিমিত্তে সিআইপি ইদ্রিচ কক্সবাজারের লাইভ ফিসে তার সাথে কয়েকবার বৈঠক করেছেন। এমনকি রয়েল টিউলিপ হোটেলে ৩ দিনের ২ লক্ষ টাকার বিলও পরিশোধ করেছিলেন, তার মেয়ের জামাইসহ হানিমুনে যাওয়াকালীন। পাশাপাশি তার মেয়ের বিয়েতে চিংড়ী মাছ বিমানে করে ইদ্রিছ বুকিং দেয়। মামলা থেকে বাঁচতে ইদ্রিছ ৭০ লাখ টাকা ঘুষ দেন। ইদ্রিছের সাথে তার প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হয়। ইদ্রিছের স্ত্রীর সাথে দুদকের ডিডি মাহবুবুল আলমের যোগাযোগ রয়েছে। এমনকি ইদ্রিছকে যেদিন গ্রেফতার করা হয়, তার ৫ মিনিট আগেও তার সাথে মোবাইলে মাহবুবের যোগাযোগ হয়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মাহবুবুল আলম কক্সবাজারের এলএ শাখার রিপোর্ট নুরুল হক ও সচিব হেলালের নিকট পাঠিয়ে দেন। সাবেক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের শ্যালক মিজানুর রহমানের সাথে আর্থিক সম্পর্ক ছিলো দুদকের এই কর্মকর্তার। ফলে তার নামে নো ডেভিটকৃত ৪ কোটি টাকা তিনি নিজেই ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কক্সবাজার শাখার ম্যানেজার আশরাফকে সরাসরি ফোন দিয়ে উত্তোলনের সুযোগ করে দেন। কক্সবাজার বিমানের জেনারেটর ক্রয়ে দূর্নীতির মামলায় নিরীহ প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম মন্ডলকে এয়ারপোর্টে তদন্তকালীন শারীরিকভাবে প্রচুর মারধর করে মাহবুবুল আলম। তিনি নীরবে তা হজম করেছিলেন। ঐ মামলায় বিমানের প্রধান প্রকৌশলী সুধেন্দু বিকাশ গোস্বামীর থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন মাহবুবুল আলম।
অপরদিকে দুদকের এই কর্মকর্তার আপন ফুফাতো ভাই সাবেক কাস্টমস কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্যারিস্টার নুরুল ইসলাম মাহবুবুল আলমের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি ডকুমেন্ট আকারে বিভিন্ন জায়গায় দিয়েছেন। তার ফুফাতো ভাই-ই মূলত মাহবুবুল আলমকে দুদকে চাকরি দিয়েছিলেন। তার ভাইয়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাহবুবুল আলমের পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলায় জমি ও তিন তলা ভবন রয়েছে। সোনাখালী গ্রামে তার বসতবাড়ীতে দুই তলা ভবন। পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর কলাপাড়ায় কয়েকশত বিঘা জমি। আমতলী উপজেলায় কয়েকশত ধানী জমি ও ৩ টি দীঘি রয়েছে। ঢাকায় শান্তিনগরে ভাগ্নি জামাই হাবিবুর রহমানের নামে ৭ তলা এবং রামপুরায় ৬ তলা ভবণ রয়েছে। পলওয়েল মার্কেটের সামনে চীন বাংলাদেশ মৈত্রী নামে ২০ তলা মার্কেটে জামাই হাবিবুর রহমানের নামে এক চতুর্থাংশ শেয়ার রয়েছে। জামাই হাবিবুর রহমানের বাড়ীও আমতলী উপজেলায়। সে বর্তমানে শান্তিনগর ৭ তলা নিজের বাড়ীতে বসবাস করেন। জামাই হাবিবুর রহমানের নামে ও তার ছেলের নামে নতুন পুরাতন গাড়ির শো-রুম রয়েছে। সব টাকার ইনভেস্টর হলেন তিনি নিজেই।
অপরদিকে অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দুদকের এই কর্মকর্তার রয়েছে বেনামে অবৈধ সম্পদ। যাদের নামে বেনামে সম্পদ রয়েছে তারা হলেন,মোশারররফ হোসেন হিরু, বাড়ী আঠারো গাছিয়া, ফারুক মৃধা, বাড়ী পূর্ব সোনাখালী, নজরুল মৃধা, বাড়ী পূর্ব সোনাখালী, মোকলেচুর রহমান, বাড়ী পূর্ব সোনাখালী, আ: রহিম (ভগ্নিপতি), বাড়ী বাউরিয়া, হেলাল মৃধা (ভগ্নিপতি), বাড়ী লালুয়া (কলাপাড়া)। এছাড়াও তার বোন, বোন জামাই, ভাগ্নে-ভাগ্নীদের নামে, এমনকি তার শ্যালক ও শ্বশুর বাড়ীর আত্মীয়দের নামে ঢাকা ও পাবনা জেলায় শত শত বিঘা জমি ক্রয় করেছেন।
এত সম্পদের তথ্য/রেকর্ড এবং প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও কমিশন প্রায় ১ বছর আগে সত্যতা পায়। তবে সত্যতা সত্ত্বেও মাহবুবুল আলম অদ্যাবধি ঢাকা-২ এর মতো সজেকায় দায়িত্বে রয়েছেন দুদকেরই প্রভাবশালীদের আর্শীবাদে। এমনকি আলোচিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সুমন দুদকে গিয়ে এতদবিষয়ে ব্রিফিং করেছিলেন।
এ বিষয়ে দুদকের কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। বিষয়টি কমিশনের সচিব ভালো বলতে পারবে। এরপরও আমি বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিবো। কেউ যদি কমিশনের সুনামক্ষুন্ন করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাহবুবুল আলমের বিশাল সম্পদের তথ্য প্রমাণ পাওয়ার পরও অদ্যাবধি কোন ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে দুদকের সাবেক ডিজি মইদুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতি নিয়ে দুদক কাজ করে। অথচ কমিশন তার বিতর্কিত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা না নেওয়া দুঃখজনক। যদি কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলে তাহলে প্রথমে তার সাসপেন্ড হওয়ার কথা কিন্তু এখানে সেটি হয়নি। এর ফলে দুদকের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মামলাও করা হচ্ছে না আবার বিষয়টি ঝুলিয়েও রাখা হচ্ছে এটি ঠিক নয়। তিনি দুর্নীতি করেছেন আবার তিনিই অন্যের অবৈধ সম্পদ খুঁজছেন এটা নিতান্তই দ্বৈতনীতি।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের কর্মীদের একাংশের অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নতুন বা বিচ্ছিন্ন কোনো বিষয় নয়। শর্ষের ভেতরেই ভূত তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। যেসব কারণ তার অন্যতম হচ্ছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের কোনো কার্যকর জবাবদিহি নিশ্চেতে দুদকের ব্যর্থতা। আর আলোচিত এ ঘটনা তারই প্রকট উদাহরণ। এক্ষেত্রে শুধু জবাবদিহি নিশ্চিত করা হচ্ছে না তা-ই নয়, বরং অপরাধের সুরক্ষা দেয়া হচ্ছে। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, দুদকের উর্ধতন মহলের একাংশ কি এ ধরনের দুর্নীতির অংশীদার? ফলে একদিকে দুদকের সৎ কর্মকরতারা হতাশ হচ্ছেন এবং অন্য কর্মকর্তারা দুর্নীতি করতে উৎসাহিত হচ্ছেন, আর অপর দিকে দুদকের ওপর সাধারন মানুষের আস্থার সংকট ঘনিভূত হচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে আরও জানতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে ফোন দেওয়া হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায় ফলে তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।