Site icon দৈনিক এই বাংলা

চট্টগ্রামে আবারো আলোচনায় এমপি মোস্তাফিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাঁশখালীর সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মুস্তাফিজুর রহমানের সাথে সাংবাদিকদের বাকবিতণ্ডাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে নৌকার প্রার্থীর লোকজনদের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেখা গেছে। এ সময় বাঁশখালী থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। 

বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাঁশখালী থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে নিচে নামার পর একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক  নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে তাকে প্রশ্ন করেন। তখন তিনি টেলিভিশনের সাথে কথা না বলে  ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে উদ্ধত হন। এ সময় পেছন থেকে এক সাংবাদিক তাকে উদ্দেশ্য করে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কিছু বলার চেষ্টা করেন। এমপি মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে থাকা নেতাকর্মীরা এ সময় সাংবাদিকদের উপর চড়াও হন। ঘটনাস্থল থেকে এমপি মুস্তাফিজুর রহমান গাড়িতে নিজ গাড়িতে উঠে আদালতপাড়া ত্যাগ করেন। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান চোধুরীর ব্যক্তিগত সরকারি মুস্তাফিজুর রহমান রাসেল বলেন, বাঁশখালী থেকে নেতাকর্মীরা মনোনয়ন জমা দেবার সময় আসে নি, আমরা চারজন ছিলাম।  গাড়িতে উঠার পর গাড়ির পেছনে কয়েকজনকে লাথি মারতে দেখা যায়। দুইটি বেসরকারি টেলিভিশনে দুই সাংবাদিককে এমপি মহোদয়ের গাড়িতে লাথি মারতে দেখা যায়। আমাদের গাড়ি আদালত পাড়া ত্যাগ করার পর সেখানে কি ঘটেছে আমাদের জানা নেই। গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।  ‘

খোঁজ নিয়ে জানা যায় চট্টগ্রাম আদালতে কর্মরত বাঁশখালীর বেশ কিছু লোকজন স্থানীয় সংসদ সদস্যদের গাড়ি আক্রান্ত হয়েছে এমন খবর পেয়ে ছুটে আসে। সুত্রমতে, বাঁশখালী আসন থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করতে ইচ্ছুক এমন একজন প্রার্থীর বেশ কিছু লোক যেন আদালত পাড়ায় আগে থেকেই উপস্থিত ছিলো। আদালত চত্বরে ওঁত পেতে থাকা  লোকজনের হাতে কয়েকজন সাংবাদিক আক্রান্ত হয়। তাদের মাইক্রোফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে গণমাধ্যম কর্মীরা জড়ো হয়ে এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানান।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন চকবাজার জয়নগর ইউনিট আওয়ামী লীগের সভাপতি  নাফিস ইমতিয়াজ সাঞ্জু। তিনি বলেন, নৌকার প্রার্থীকে নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হলে তিনি বক্তব্য না দিয়ে চলে যেতে চান।  বাঁশখালীর সংসদ সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর বেশ কিছু লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃস্টির চেষ্টা চালায়। তারা বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙ্গা ও দেশ টিভির মাইক্রোফোন ছিনিয়ে  নিয়ে যায়। মূলত আওয়ামী লীগকে বিতর্কিত করতে পরিকল্পিতভাবে সাংবাদিক হেনস্তার এমন ঘটনা সাজানো হয়েছে। ‘

এদিকে,  সাংবাদিককে মারধর এবং সাংবাদিকদের সাথে অপেশাদার আচরণের অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের আদালত পাড়ায় মানববন্ধন করেছে কর্তব্যরত সাংবাদিকরা। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফখরুজ্জামানের কাছে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগও দেন সাংবাদিকরা। 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফখরুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকদের উপর হামলার বিষয়ে  লিখিত অভিযোগ পেলে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে,  ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিনসহ সাংবাদিকদের লাঞ্চিত করার ঘটনায় চট্টগ্রাম-১৬ আসনের আ.লীগ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমানকে শোকজ করেছে কমিশন গঠিত নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি (চট্টগ্রাম-১৬) কমিটির চেয়ারম্যান যুগ্ন জেলা ও দায়রা জজ আবু সালেম মোহাম্মদ নোমান। 

প্রসঙ্গত,  ( চট্টগ্রাম ১৬ ) বাঁশখালী আসন থেকে এবার আওয়ামী লীগের  মনোনয়ন চেয়েছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সিআইপি, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের  সদস্য আব্দুল্লাহ কবির লিটন। নানা ঘটনায় আলোচিত- সমালোচিত হন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজ। তবে মনোনয়ন দেবার ক্ষেত্রে গেল দুইবারের এমপি মুস্তাফিজুর রহমানের উপরেই আস্থা রেখেছেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এইবাংলা /তুহিন 

Exit mobile version