বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম যে মামলাটির রায় হয় সেটি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা। ২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন। ২০০৯ সালে মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এর মাঝে ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত ছিল।
আইন অনুযায়ী দূর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে সংস্থাটিকে দূর্নীতি দমন কমিশনে রুপান্তরিত করা হয়েছিলো ২০০৪ সালে ৯ই মে ( বিএনপি সরকারের সময়)। সেই সময় ২৪৯ জন কর্মকর্তাকে দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে সরিয়ে নেয়া হলে তারা নতুন গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনে নিজেদের বহাল রাখতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। ২০০৬ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরোর কর্মকর্তা আহসান আলীর দায়ের করা পিটিশন ১৬৯২ এবং ২০০৫ সালে দায়ের করা পিটিশন নং ৭৪২৮ আদালত খারিজ করে দেন।
হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বাদি দুদক কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ সংস্থাটিতে বহাল থাকার সুযোগ ছিলো না। যদিও তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে ব্যুরোর কর্মকর্তাদের নতুন গঠিত দুর্নীতি দমন কমিশনে বহাল রাখেন।
বিদেশ থেকে আসা এতিমখানার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন । কিন্তু যে কর্মকর্তা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন তিনি সেই ২৪৯ কর্মকর্তারদেই একজন। বিশ্লেষকদের মতে, দূর্নীতি দমন কমিশনে বাদি হারুনুর রশিদের বহাল থাকার আদেশই অবৈধ। পরবর্তীতে অবৈধ দুদক কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ খারেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার চার্জশিট প্রদান করেন। বিদেশ থেকে আসা এতিমখানার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন। মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ, তারেক রহমানসহ অন্যান্য আসামীদের ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়। তারেক রহমান সহ বাকি ৫ আসামীর ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা হয়।
রিট পিটিশন খারিজ করে দিয়ে আদালত নির্দেশনা দেয়, দূর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে সরিয়ে নেয়া কর্মকর্তাদের স্ব স্ব স্থানে যোগ দিতে। হাইকোর্ট বলে, ‘ কমিশন ক্ষমতা ধারা ২০(২) এবং সেইসাথে আইন ২০০৪ এর ৩৫(২) প্রয়োগ করেছে। আইনের তথ্য ও পরিস্থিতির বিধান এবং উল্লেখিত মামলা বিবেচনা করে, আমরা এই রিট পিটিশনে কোন সারবত্তা পাওয়া যায় নি। ২০০৬ সালের রিট পিটিশন নং ১৬৯২ এবং ২০৯৫ সালের রীট পিটিশন নং ৭৪২৮ এর নিয়ম অনুযায়ী খরচের কোনো আদেশ ছাড়াই ডিসচার্জ করা হলো। ‘