” ফটিকছড়িবাসীর কাছে আমি কোন নেত্রী হয়ে নয়,তাদের মেয়ে হয়ে,বোন হয়ে পাশে থাকতে চাই সবসময়। যাকে বড়রা আদেশ করতে পারবেন,ছোটরা আবদার করতে পারবে। “
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য হয়েছেন একঝাঁক নবীন। এরমধ্যে ছাত্রলীগের তৃণমূল থেকে উঠে আসে নেত্রী সাবরিনা চৌধুরী নিজের নিজের মেধা, প্রজ্ঞা, রাজনৈতিক কর্মকান্ড দিয়ে নজর কেড়েছেন সুশীল সমাজের।
বিশ্লেষকদের মতে, তরুণদেরই দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎকে মানবিক ও সম্মৃদ্ধ করার কাজটি করতে হবে। ব্যর্থ নেতৃত্বের দিকে ফিরে তাকানোর অভ্যাস ভুলে আশাপ্রদ ও নিরাপদ রাজনীতির পুনরাবৃত্তি করতে হবে। বাংলাদেশে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতারা বর্তমান তরুণ প্রজন্মের অপূরণীয় ক্ষতি করেছেন। ফলে রাজনীতিতে তরুণরা যখনই সামনে তাকাচ্ছে তখন তারা কোনো আশাপ্রদ ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে না। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন, দেশের রাজনীতি, সমসাময়িক বিষয় নিয়ে দ্য প্রবাসী মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির নবীন সদস্য সাবরিনা চৌধুরীর সাথে।
তানভীর আহমেদ :
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ছাত্রনেতাদের প্রাধান্য দেয়া রীতি কমেছে। আপনি কি মনে করেন?
সাবরিনা চৌধুরী :
আমাদের শিক্ষিত তরুণদের একথা জানা উচিত, রাজনীতি হচ্ছে শাসন করার বুদ্ধিমত্তার আলোকিত প্রক্রিয়া। সেখানে ব্যক্তির খেয়াল-খুশির কোনো জায়গা নেই। রাজনীতি বলতে কী বোঝায়, সে সম্পর্কে দার্শনিক প্লেটো থেকে শুরু করে রুশো এবং আরও অনেকের শিক্ষাই আমরা লাভ করেছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগই সম্ভবত একমাত্র দল যেটি ব্যবসায়ী কিংবা পেশাজীবিদের ভীড়ে তৃণমূল থেকে উঠে আসা ছাত্রনেতাদের জায়গা তৈরি করে দিয়েছে।
তানভীর আহমেদ ::
বর্তমান সরকারের তিন মেয়াদে উন্নয়ন কর্মকান্ডকে ম্লান করেছে দূর্নীতি। দূর্নীতির সাথে দলের সুস্পষ্ট যোগাযোগ না থাকলেও, আওয়ামী লীগের নেতারাই তো দূর্নীতির অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হিসেবে কি বলবেন?
সাবরিনা চৌধুরী :
দুর্বৃত্তপনা, প্রতারণা, দুর্নীতি করে জনগণের অর্থ লুটপাট করাকে তো রাজনীতি বলে না। একজন রাজনৈতিক নেতার যেমন গভীর জ্ঞান থাকতে হয়, তেমনি থাকতে হয় জনগণের প্রতি প্রবল দায়িত্ববোধ। দেশ ও দেশের প্রতি মমত্ববোধের কারণেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য নিজের জীবনের পুরোটা বিনিয়োগ করেছেন। তারই কণ্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গত তিন মেয়াদ দেশকে উন্নয়ন এবং সম্মানের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। দূর্নীতি আসলে দূর্নীতিবাজরা করেছে, দেশপ্রেম থাকা মুজিবের আদর্শিক কর্মীরা করে নি।
সাবরিনা চৌধুরী :
বিদেশে গিয়ে পড়ালেখা না করে সরকারি স্কুল ও সরকারি কলেজে পড়েছি।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করেছি ১ম শ্রেণীর ফলাফল নিয়েই।ছাত্র রাজনীতি ও পড়ালেখা দুইটাই একসাথে করেছিলাম।
তানভীর আহমেদ :
আপনি নিজের এলাকা ফটিকছড়ি থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। আপনার বাবাও একই আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এতো নবীন বয়সে সংসদ সদস্য হতে চাওয়ার ভিশনটা আসলে কি?
সাবরিনা চৌধুরী :
যারা বিত্তবান হওয়ার ব্যবসাকে রাজনীতি হিসেবে দেখেন তারা আসলে সুন্দর সমাজের জন্য যা কিছু শুভ ও কল্যাণকর তার সবকিছুরই শত্রু। বিত্তবৈভবের চিন্তা বাদ দিয়ে যারা দেশ গড়ার কাজে নিজের জীবন বিনিয়োগ করতে চান, তাদের নবীন বয়সেই পার্লামেন্টে আসা উচিত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরো জীবনটা দেখলেই তেমন ভিশন চোখে পড়বে।
নবীন বাংলাদেশে কিছু অনভিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে রাজনীতির লক্ষ্য-উদ্দেশ্যই বদলে যায়। সবার চোখে রাজনীতি হয়ে দাঁড়ায় তখন প্রতারণা এবং ব্যক্তিস্বার্থে জনগণের অর্থ লুটপাট করা। লোভ-লালসার রাজনীতিতে নীতি-চরিত্রের কোনো বালাই থাকেনা। যাদের আত্মসম্মানবোধ আছে তাদের কাছে এ অবস্থা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। সেকারণে নবীন বয়সেই আমার এলাকাবাসীর জন্য কাজ করার স্পষ্ট ঘোষণা আমার আছে, ভিশনও আছে।
আমার দাদা মরহুম আবুল হোসেন শাহ চৌধুরী একজন সমাজসেবক হয়ে এলাকার জন্য কাজ করেছিলেন। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। আমার বাবাও সাবেক সাংসদ মজহারুল হক শাহ চৌধুরী ফটিকছড়ির মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করেছেন।তাই পরিবার থেকেও মানু্ষের পাশে থাকার শিক্ষাটা পেয়েছি বলা যায়। সেই শিক্ষা ও স্পৃহা কাজে লাগাতে চাই। রাজনীতির অপর নাম আমার কাছে সমাজসেবা,মানুষের পাশে থাকা।ফটিকছড়িবাসীর জন্য ভাল কিছু করতে চাই।রাজনীতি করে অর্থের প্রতি লোভ করিনি কখনো। বরং কিভাবে মানু্ষের কাছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর ইতিবাচকতা তুলে ধরা যায় সেভাবে কাজ করার চেষ্টা করেছি।কারণ আমি দলের একজন হয়ে যদি একটা ভাল কাজ করতে পারি তাহলে সুনাম টা আমার দলেরই হবে।
তানভীর আহমেদ –
ফটিকছড়ির মানুষের উদ্দেশ্য আপনি কি বলতে চান?
সাবরিনা চৌধুরী :
ফটিকছড়িবাসীর কাছে আমি কোন নেত্রী হয়ে নয়,তাদের মেয়ে হয়ে,বোন হয়ে পাশে থাকতে চাই সবসময়। যাকে বড়রা আদেশ করতে পারবেন,ছোটরা আবদার করতে পারবে।