Site icon দৈনিক এই বাংলা

ভেজাল বীজে দিশেহারা কৃষক

আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:-

নাটোরের নলডাঙ্গায় সীড স্বর্ণা-৫, ব্রি-২৯, দিনাজপুর সীড-ব্রি-২৯ ও সম্পারানী জাতের বীজ আমন মৌসুমে রোপণ করায় সময়ের আগেই গজিয়েছে ধানের শীষ। এতে পরিপক্ব হওয়ার আগেই অধিকাংশতেই ধরেছে চিটা। আর ফলন বিপর্যয়ে দিশেহারা কৃষকেরা।

নলডাঙ্গা বাজারের একটি দোকান থেকে বীজ কিনে এ প্রতারণার শিকার হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন তারা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার বেলঘরিয়া, নশরৎপুর, সাহেব ভিটা মাঠের প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে প্রিমিয়াম সীড স্বর্ণা-৫, ব্রি-২৯, দিনাজপুর সীড-ব্রি-২৯ ও সম্পারানী কোম্পানির বীজ বপন করে প্রতারিত হয়েছে শতাধিক কৃষক। এ মাঠের রোপণ করা জমিতে দেখা যায় সময়ের আগেই গজিয়েছে ধানের শিষ, পরিপক্ব হওয়ার আগেই অধিকাংশতেই ধরেছে চিটে।

বেলঘরিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষক হায়দার আলী বলেন, ‘আমার ৫ বিঘা জমিতে নলডাঙ্গা বাজারের সেলিম বীজ ভান্ডার থেকে প্রিমিয়াম সীড ব্রি-২৯ জাতের ধান রোপণ করে প্রতারণার শিকার হয়েছি। ধানের শিষ বের হওয়ার পর দেখা যায় অধিকাংশ ধানের শিষ চিটা হয়ে মরে যাচ্ছে। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছি।’

ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলাল শেখ, আব্দুর রহমান, চান্দু শেখ, মাসুদ শেখ, দোলোরা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, বাজার থেকে বীজ কিনে জমিতে রোপণ করে আমাদের সর্বনাশ হয়েছে। এ ধান দিয়ে আমাদের পরিবারের সারা বছরের তিন বেলা খাবার জোটে। কিন্তু এখন এসব জমির ধান চিটা হয়ে ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। আমরা পরিবার নিয়ে কি খাব? এ জমিগুলো এসব ধান রোপণ, সেচ সার কীটনাশক প্রয়োগ করে বিঘা প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমরা ক্ষতিপূরণ ও বিচার দাবি করে ইউএনও ও কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু এখনো কোনো প্রতিকার পাইনি।

অভিযুক্ত নলডাঙ্গা বাজারের সেলিম বীজ ভান্ডারের মালিক আহাদ আলী বলেন, ‘বোরো মৌসুমের প্রিমিয়াম সীড ব্রি-২৯ ও স্বর্ণা-৫ জাতের বীজ ছিল সেগুলো কৃষকদের কাছে বিক্রি করেছি। আমি দিনাজপুর থেকে বীজগুলো সংগ্রহ করি। বীজগুলোর চারা গজিয়েছে ফলন না হলে আমাদের কিছু করার নাই।’

ইউএনও দেওয়ান আকরামুল হক বলেন, ‘কৃষকেরা বাজার থেকে আমন ধানের বীজ কিনে প্রতারিত হওয়ার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উপজেলা কৃষি বিভাগকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘উপজেলার কিছু কৃষক বাজার থেকে আমন ধানের বীজ কিনে রোপণ করে দেখেন ধানে চিটা হয়েছে। এ বিষয়ে কৃষকেরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা তদন্ত শুরু করেছি, সত্যতা পেলে বীজ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Exit mobile version