Site icon দৈনিক এই বাংলা

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস

:::নিজস্ব প্রতিবেদক :::

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের শান্তি সমাবেশে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস আর কোলাহোলে অন্য রকম এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যদি রাত পোহালে শোনা যেতো বঙ্গবন্ধু মরে নাই’- গান গেয়ে শুক্রবার দুপুরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শান্তি সমাবেশ শুরু করে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠন, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ।

শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে নির্মিত মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের তিন সংগঠনের এই সমাবেশ শুরু হয়।

সূচনায় গাওয়া হয় ‘যদি রাত পোহালে শোনা যেতো বঙ্গবন্ধু মরে নাই’ গানটি। এরপর পাঠ করা হয় প্রয়াত কবি সামসুল হকের ‘আমি এসেছি’ কবিতাটি। মঞ্চে উপস্থিত আছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম।

শান্তি সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ এবং সঞ্চালনায় আছেন সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

সমাবেশে বক্তারা দেশের গণতন্ত্র রক্ষায় রাজপথে থাকার প্রত্যায় ব্যক্ত করেন। বলেন, এই দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে তাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচনে আবারও বিজয়ী করবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়েই তারা তাদের শান্তি সমাবেশ অব্যাহত রাখবেন। দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা হতে দেবেন না।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে তারেক রহমান এখন লাদেন রহমানে পরিণত হয়েছে। এখন উনি বিদেশ থেকে বাণী শোনান।

জাহাঙ্গীর কবির নানক আরও বলেন, ‘ নির্বাচন যত সন্নিকটে, ততই বিএনপি বানচালের চক্রান্ত করছে। একটি অবৈধ সরকার আনতে চায় তারা। তারা গণতন্ত্র মানবাধিকারের কথা বলে। অথচ, তাদের জন্ম অগণতান্ত্রিক পথে। তাদের নেতা জিয়াউর রহমান ২৪ ঘণ্টার কারফিউ দিয়ে গণতন্ত্র কায়েম করেছে। তারা আজ গণতন্ত্রের বাণী শোনায়। মানবাধিকারের বাণী শোনায়। অথচ ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলা করেছিল তারা।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘ বিএনপির কখনো ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। নেতৃত্ব শূন্যদল, তাই নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, পেছনের দরজার দিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। লাভ নেই। আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ পুনরায় শেখ হাসিনাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে খেলা হচ্ছে। যারা এক-এগারোর স্বপ্ন দেখে তারা এই খেলা খেলছে। বিএনপি-জামায়াতের যখনই কেনো সমাবেশ হয়, তার আগে তারা বিশেষ একটি দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করে। এর কারণ একটাই বিএনপি এখন ওই বিশেষ দেশের ষড়যন্ত্রের ক্রীড়নক হিসেবে খেলছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত আমাদের শান্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নৈরাজ্য করে। বাংলাদেশের মানুষের শান্তি বিনষ্ট করতে চায়।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, বিএনপিকে দাঁতভাঙা জবাব দিতে যুব, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রলীগের নেতৃত্বে লাখো জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের ষড়যন্ত্রের জবাব দেব।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, সবার মিছিল মিটিং করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি মিছিল মিটিংয়ের নামে অশান্তি-অরাজকতা তৈরি করে, তাদেরকে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসবক লীগ ও ছাত্রলীগ প্রতিরোধ করবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, তারা (বিএনপি) দুর্নীতির রাজপুত্র পেতে পারে, রাজপথের প্রকৃত রাজপুত্র তো বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

সাদ্দাম হোসেন বলেন, এ দেশকে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হতে দেয়া হবে না। গণতান্ত্রিক লাইসেন্স নিয়ে কোনো বিশৃঙ্খলা করলে ছাত্র জনতা জবাব দেবে। যারা অনির্বাচিত সরকারের দালালি করবে, সংবিধানের ধারাবাহিকতায় বাধা হয়ে দাঁড়াবে, আমরা তাদের দম্ভ চূর্ণ করে দেব।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেছেন,‘আজকে যেভাবে লাখ লাখ যুবক ও ছাত্রদের উপস্থিতির মাধ্যমে এই শান্তি সমাবেশ সফল করেছি, একইভাবে আগামী নির্বাচনে লাখ লাখ ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনার বিজয়, নৌকার বিজয় নিশ্চিত করব।’

‘শান্তি সমাবেশ’ দুপুর ৩টায় শুরুর কথা থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, শহীদ মিনার, হাইকোর্ট মোড়, শাহবাগ মোড়, কদমফোয়ারা, পল্টন, গুলিস্তানসহ বিভিন্ন এলাকা এবং ঢাকার আশপাশ থেকে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসতে শুরু করেন সকাল থেকে।বেলা ১১টায় মঞ্চের চারপাশে জড়ো হওয়া টি-শাট পরা কর্মীদের মাথায় নানা রংয়ের ক্যাপ দেখা যায়। সে সময় প্রচণ্ড রোদ থাকায় মঞ্চের সামনের জায়গা বাদ দিয়ে আশপাশে অবস্থান করতে দেখা যায় কর্মীদের।

এদিকে দেড় কিলোমিটার দূরে নয়া পলটনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশে মিলিত হয়েছে দলটির নেতাকর্মীরা।নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে আলোচিত এই সমাবেশ দুটি করতে পুলিশ দুই পক্ষকেই ২৩টি শর্ত বেঁধে দেয়।

এইবাংলা/ হিমেল

Exit mobile version