Site icon দৈনিক এই বাংলা

পটুয়াখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকাকে হারাতে পিতা ও পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী

গোপাল হালদার, পটুয়াখালী:

পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় শ্রীরামপুর ইউপিতে নৌকা রুখতে পিতা ও পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন। নৌকার বিরুদ্ধে পিতা ও পুত্রের এ ভোটযুদ্ধকে কেন্দ্র করে শ্রীরামপুর ইউপিতে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।

সকাল থেকে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সকল প্রার্থীরা। তবে পিতা মো. আজাহার মৃধা (আনারস) মার্কা নিয়ে এ গ্রামে ভোট চাইতে গেলে ছেলে মো. মাহামুদ হাসান (ঘোড়া) মার্কা নিয়ে আরেক গ্রামে ভোট চাওয়ার কথা। কিন্তু তারা দুজন তার উল্টো। দুজন মিলে একসঙ্গেই ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ভোট চাইছেনও পিতার পক্ষে। এ নিয়ে ভোটারদের মাঝে নানামুখী আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে পুরো উপজেলায়।

শ্রীরামপুর ইউপিতে মো. আমিনুল ইসলাম ছালামের (নৌকা) বিরুদ্ধে পিতা পুত্রের এমন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার কারণে ফলাফল শেষ পর্যন্ত কী হবে তা নিয়ে বিশ্লেষণেরও কমতি নেই। আগামী ১৭ জুলাই ইউপি নির্বাচনে এ উপজেলার শ্রীরামপুর ও লেবুখালী ইউপিতে এক সঙ্গে ভোটগ্রহণ করা হবে।

উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নে মো. আমিনুল ইসলাম ছালাম (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মো. আজাহার মৃধা (আনারস) ও তার ছেলে মো. মাহমুদ হাসান (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শ্রীরামপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে বেশ আগে থেকেই নির্বাচনী তৎপরতা চালাচ্ছিলেন মো. আজাহার মৃধা। তার বিরুদ্ধে ৠণ খেলাপির অভিযোগ থাকায় মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কৌশলগত কারণে পুত্র মাহমুদ হাসানকে দিয়েও মনোনয়ন দাখিল করান। পরবর্তীতে আজাহার মৃধার মনোনয়ন বাতিল হলে ৠণ পরিষোধ শেষে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে মনোনায়ন ফিরে পেলেও কৌশলগত কারণেই পুত্রের মনোনায়ন প্রত্যাহার করাননি। যা নির্বাচনের সময়ে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে দ্বিগুণ এজেন্ট থাকায় এর প্রভাব ভোটারদের মাঝে পড়বে বলে মনে করছেন সাধারণ ভোটররা।

শ্রীরামপুর ইউপির নারী ভোটার রহিমা বেগম বলেন, ছালাম মিয়া আগের চেয়ারম্যান হেরে মোরা চিনি। হুনছি আজাহার মৃধা ও হের পোলয়ও খাড়াইছে। পোলারে এহোনো দেহিনাই ভোট চাইতে। তয় যে ভালো কাম হরবে মোরা হেরেই ভোট দিমু। বাপ পোলায় নির্বাচন করছে প্রশ্নে তিনি আবার বলেন, ট্যাহা আছে বাপ পোলায় ক্যা বউও নির্বাচন হরতে পারে আমাগো কিছু কবার নাই।

শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যন প্রার্থী মো. আমিনুল ইসলাম ছালাম বলেন, আনারসের প্রার্থী মো. আজাহার মৃধাকে বিজয়ী করতে মাঠে কাজ করছে আজাহার মৃধার ছেলে ঘোড়া মার্কার মাহমুদ হাসান ও তার কর্মীরা। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমাজে বিরল। তবে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য ভোটাররা নৌকার প্রার্থীকেই (আমাকে) বিজয়ী করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।

সতন্ত্র প্রার্থী আজাহার মৃধার (আনারস মার্কা) সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ তুলে বলেন, নির্বাচনে সরকারি দলের প্রার্থী তাকে প্রচারণায় বাঁধা প্রদান করেন কিন্তু উপজেলা নির্বাচন কমিশনারের কাছে অভিযোগ করছেন কিনা প্রশ্নে ব্যস্ত আছি বলে ফোনটি কেটে দেন।

আরেক সতন্ত্র প্রার্থী আজাহার মৃধার ছেলে মাহমুদ হাসানের (ঘোড়া মার্কা) মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নির্বাচন করায় পিতার সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতির হয়। আর সম্পর্কের অবনতির কারণেই অর্থ সংঙ্কটের পোস্টার ছাপাতে পারেননি বলে তিনি জানান। ভোট কেন্দ্রে দ্বিগুণ এজেন্ট দিয়ে প্রভাব বিস্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমরা অন্যায় কিছু করলে প্রশাসন বসে থাকবে? তবে আমি শতভাগ আশাবাদী জনগন ঘোড়া মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সুমন মিয়া জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে প্রত্যেক প্রার্থীই তার এজেন্ট দিতে পারবে এতে কোনো বাঁধা নেই। বাপ ছেলের প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনো ধরনের অপরাধ করার সুযোগ নেই এ নর্বাচনে। অভিযোগ আসলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এইবাংলা/ নাদিরা শিমু

Exit mobile version