:::মিরসরাই প্রতিনিধি:::
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ে নির্মাণের তিন দিনের মাথায় ধসে পড়েছে একটি ড্রেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই সদর এলাকার বাজারের দক্ষিণ অংশে ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই ড্রেন নির্মাণে বরাদ্ধ দেওয়া হয় ২৮ লাখ টাকা। পর্যাপ্ত বরাদ্ধের পরও ড্রেনটি নির্মাণে কোন রড ব্যবহার করা হয়নি। এছাড়া ড্রেনের উপরে স্লেপও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিরসরাই সদরের পশ্চিম পাশের লেনের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে দক্ষিণ পাশের ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি পানি নিষ্কাশন ড্রেনের ভেঙে যাওয়া অংশ পরিষ্কার করতে এসেছে সওজ ঠিকাদারের কিছু কর্মী। যেটার কিছু অংশের কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। সড়কের একলেনের বৃহৎ অংশ বন্ধ করে কাজ করায় আগের মতো যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। যে কারণে দিনভর থেমে থেমে যানজটও লক্ষ্য করা গেছে। এর আগেও ড্রেনটি নির্মাণের সময় সড়কের উপর নির্মাণসামগ্রী রাখায় গত দেড় মাস ধরে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। একই সঙ্গে একাধিক দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে ওই এলাকায়।
শ্রমিকরা জানায়, ঈদের বন্ধের আগে কাজ শেষ করে ওরা বাড়ি গেছে। কাজ শেষ করার তৃতীয় দিনের মাথায় ধসে পড়েছে ড্রেনটি। ড্রেনে কোন রড ব্যবহার করা হয়নি। আবার গাথুনিতেও সিমেন্টে ব্যবহার হয়েছে কম। নিম্নমানের ইট-বালু ও সিমেন্টের পরিমাণ কম ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রমিকরা জানায়, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাহের ব্রাদার্স যেভাবে নির্দেশ দিয়েছে সেভাবেই ড্রেন তৈরি করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ড্রেনটি নির্মাণের ৩দিনের মাথায় ভেঙে পড়েছে। ড্রেনের উপরে স্লেপ না দেয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে পথচারীরা। ড্রেনে স্লেপ নির্মাণ না করা হলে দুর্ঘটনা লেগেই থাকবে।
স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, এভাবে রডবিহীন নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ড্রেন নির্মাণ করার সময় আমাদেরও সন্দেহ হয়েছিল ড্রেনটির টেকসই নিয়ে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাহের ব্রাদার্স’র প্রজেক্ট ম্যানেজার রাসেল আহমেদ জানান, ড্রেনটি নির্মাণে ২০ থেকে ২৫ দিনের বেশি সময় লাগেনি। বৃষ্টির কারণে ঠিকমতো কাজ সম্ভব হয়নি। এছাড়া ড্রেনটি একেবারে সড়ক ঘেঁষা হওয়ায় পর্যাপ্ত মালামালও রাখা যেতো না।
তিনি আরো জানান, এটার দৈর্ঘ্য ২৬০ মিটার। এ ধরনের ড্রেন নির্মাণে রড ব্যবহার করা হয় না। ড্রেনের উপরে স্লেপ দেয়ার বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন ফোন করেছিলো। আমি দুয়েকদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে বাকি কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে তাদের জানিয়েছি।
এ বিষয়ে সওজ ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দীন খালেদ চৌধুরী বলেন, এই ড্রেনটি ১০ মিটার প্রস্থের তাই রড দেয়নি। আর ২৮ লক্ষ টাকা বরাদ্ধে সিডিউল অনুযায়ী কাজের মান নিয়ে তিনি বলেন, কাজ যতটুকু হয়েছে নির্মাণের পর পাশে ন্যুনতম ৬ ফুটের ব্যারিকেড দিয়ে রাখা প্রয়োজন ছিল একমাস ধরে। কিন্তু ওরা তা না করায় কোন গাড়ি চাপায় এমনটি হয়েছে হয়তো। কিন্তু ওই সময় তো কোন গাড়ি দুর্ঘটনার অস্তিত্ব ওখানে পাওয়া যায়নি- জানালে প্রতিউত্তরে কোন মন্তব্য করেননি এই কর্মকর্তা।