Site icon দৈনিক এই বাংলা

ফটিকছড়িতে বিএনপির দুই ডজন নেতাকে আসামি করে মামলা

::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির হেঁয়াকো বাজারে উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক সরওয়ার আলমগীরের মোটর শোভাযাত্রায় হামলার ঘটনার তিনদিন পর ২২ জনকে আসামি করে ভুজপুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ভুজপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র)  সুমন চন্দ্র দাস।এই মামলায় এক নং আসামী করা হয়েছে বিএনপি নেতা সরওয়ার আলমগীরকে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ১৫০/২০০ জনকে মামলায় আসামী করা হয়েছে।

শুক্রবার মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। মামলা নেয়ায় বিলম্বের কারনও উল্লেখ করা হয়েছে ৩নং দাঁতমারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য সেলিম সরকার বাদি হয়ে করা মামলার এজাহারে। যদিও বাদি টাইপ করা অভিযোগ জমা দেন ৬ই জুন।

এজাহারে উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক  সরওয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা বেলাল সওদাগর, এমরামুর হক কবির, জিয়াউল হক, আবুল খায়ের, শাকিল চৌধুরীসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মারাত্মক অস্ত্রে  সজ্জিত হয়ে  দাঙ্গা সৃস্টি ও হত্যার উদ্দেশ্যে ‘বিস্ফোরণ ‘ ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে। এছাড়া মোটর শোভাযাত্রা থেকে সাধারন ও গুরুতর জখম, প্ররোচনার অভিযোগ করা হয়েছে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে।

গত সোমবার উত্তর ফটিকছড়িতে একটি অনুষ্ঠানে মোটর বহর নিয়ে যোগ দেবার মাঝপথে হেঁয়াকো বাজারে বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিএনপির বেশকিছু কর্মী সমর্থক আহত হলেও দলের পক্ষে কোন মামলা দায়ের করা হয় নি। ঘটনার পরদিন ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরী এমন ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করেন।  একদিন পর সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম মুহুরীকে দায়ী করেন উত্তর জেলা বিএনপি।

ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরীর নির্দেশেই বিএনপির শোভাযাত্রায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার আলমগীর। বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত  সংবাদ সম্মেলনে এমন  অভিযোগ করার দুইদিন পর তাকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়।

উত্তর জেলা বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছর ধরে যা করেছে, এটাও তার অংশ। তারা মুখে বলে শান্তিপূর্ণ, কিন্তু তারা যে কত অশান্ত সেটা বর্তমান ফটিকছড়ির বিভীষিকাময় পরিস্থিতিই প্রমাণ করে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবেই ঈদপরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করতে রাস্তায় নেমে নীরব শোভাযাত্রা বের করি। সেই শোভাযাত্রায় তারা হামলা করেছে। হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার না করে  উল্টো বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ‘

অবশ্য ঘটনার তিন দিন গত হলেও দুই পক্ষের কথা ছুঁড়াছুঁড়িতে আওয়ামী লীগের পক্ষে থানায়  অভিযোগ দেয়া হলেও মামলা নেয় নি ভুজপুর থানা। সুত্রমতে, উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনার কারণে পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতার পাঠানো এজাহার গ্রহন করতে বাধ্য হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রামের ডিআইজি নুরে আলম মিনা হাটহাজারী -ফটিকছড়ির সার্কেল এসপিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকের পরদিন ( শুক্রবার) আওয়ামী লীগের তরফ থেকে দায়ের করা মামলা নেয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শিদের মতে, মোটর সাইকেল বহরে থাকা ছাত্রদল -যুবদলের নেতাকর্মীর সরকার বিরোধী  শ্লোগান দেয়া নিয়ে সংঘর্ষ বাঁধে আওয়ামী লীগ -বিএনপির কর্মীদের মধ্যে। ঘটনার  শুরুতে গাড়ি বহরের বেশ কিছু মোটর সাইকেল ভাংচুর করে স্থানীয়  ছাত্রলীগ,যুবলীগের কর্মীরা। প্রথম পর্বে হামলায় অন্তত ৩০ মোটর সাইকেল আরোহী আহত হন। অনেকে মোটর সাইকেল ফেলে পালিয়ে যান। সরওয়ার আলমগীরের অনুসারী ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্তত তিন শত মোটর সাইকেলের  শোভাযাত্রা ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার পর সংগঠিত হয়ে পুনরায় বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে নিজেদের মোটর সাইকেল ফেরত নিয়ে যায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে এলাকায় আতন্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। এই ঘটনার পর ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন,  বিএনপি নেতা সরওয়ার আলমগীর ঈদ পরবর্তী অনুষ্ঠান বা  মোটর শোভাযাত্রার বিষয়ে থানাকে অবহিত করেন নি। একারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।

এইবাংলা/ হিমেল

Exit mobile version