::::নিজস্ব প্রতিবেদক:::
স্হানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সন্দ্বীপ চ্যানেল থেকে বেড়িবাঁধ কেটে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাট করছে মাদার স্টিল শিপইয়ার্ডের মালিক মাষ্টার কাশেম। বালু উত্তোলন করার কারণে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।
সরেজমিন দেখা যায়, সীতাকুন্ড উপজেলার ৬নং বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড আকিলপুর এলাকায় সমুদ্র থেকে দীর্ঘ প্রায় ৩০০ মিটার লম্বা পাইপ লাইনের মাধ্যমে শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। উত্তোলিত বালু দিয়ে বেড়িবাঁধের পূর্বপাশে প্রায় অর্ধএকর একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন নদী ভাঙ্গনের শঙ্কা বেড়েছে, তেমনিভাবে পুকুর ভরাট করে ক্ষতি করা হচ্ছে পরিবেশের।
স্থানীয়দের অভিযোগ সরকারের শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ কেটে পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাত-দিন চলছে এমন কর্মযজ্ঞ।বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী চেয়ারম্যান চক্র। যেখানে সরকার বেড়িবাঁধ রক্ষায় নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে জনপ্রতিনিধিরাই ভুমিকা নিয়েছে ভক্ষকের।
এমনিতেই এক কিলোমিটার দূরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে আলেকদিয়া বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জনবহুল এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। এবার হয়তো একই ক্ষয় ক্ষতির পুুনরাবৃত্তি দেখবে আকিলপুরের বাসিন্দারা।
বাধঁকেটে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাট করার পরিবেশের এমন বিপর্যয় নেপথ্য নায়কদের বিচারের মুখোমুখি করতে চায় স্থানীয়রা। কিন্তু নির্বিকার প্রশাসন যেন চোখে পট্টি বেঁধেছে।
মাদার স্টিল শিপইয়ার্ডের মালিক ও পুকুরের স্বর্থাধিকারী মাষ্টার কাশেমের কাছে বালু উত্তোলন ও পুকুর ভরাটের কথা জানতে চাইলে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান শওকত আলি জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। বালি উত্তোলনের যাবতীয় যন্ত্রাংশ নাকি চেয়ারম্যানের। বললেন চেয়ারম্যান উত্তোলন করছে বালি।
তবে চেয়ারম্যান শওকত আলি জাহাঙ্গীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি বালু উত্তোলন করছি কথাটি সত্য নয়। তবে আমার ড্রেজারের ব্যবসা রয়েছে। মূলত আমার ভাই এসব দেখাশোনা করে। তবে আমি যতটুকু জানি বালু উত্তোলনে সংশিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নেয়া আছে।
দীর্ঘদিন ধরে সীতাকুণ্ডের সমুদ্র উপকূলে গড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলন চলছে। বাঁধের নিরাপত্তা বিষয়টি নিশ্চিত না করেই চলে এমনন পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড।
উপকূলীয় বনাঞ্চলও রেহাই পায়নি তাদের আগ্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে। এখানকার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে থাকা কেওড়া বন গেল বছরেই কেটে সাবাড়৷ করা হয়েছে। স্কেভেটর দিয়ে সমুদ্র তীরবর্তী মাটি কেটে ফেলায় গভীর খাদ তৈরি হবার নজিরও আছে । এতে উপকূলীয় বন উজাড় হয়ে সমুদ্রের গভীরতা বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড়-সাইক্লোনসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষার প্রাকৃতিক রক্ষাবন অঞ্চল ধ্বংস হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয়রা। দিনরাত ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও এখনো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
এইবাংলা/ হিমেল