Site icon দৈনিক এই বাংলা

ছড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি চলাচলে বাধা তৈরি করেছে ইউনিটেক্স গ্রুপ

নিজেস্ব প্রতিবেদক

ইউনিটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেডের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ডে একটি পাহাড়ি ছড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়ার বোয়ালিয়াকুল ছড়া নামে পরিচিত এই ছড়াটিতে বাঁধ দেওয়ার ফলে এলাকায় মারাত্মক পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

তাছাড়া স্থানীয় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন সেচ নিয়ে। ছড়া শুকিয়ে যাওয়ায় হুমকিতে পড়েছে ছড়ার জলজ প্রাণী, পাহাড়ি উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য। ছড়াটি সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ায় গতিপথ পাল্টে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে গ্রামীণ জনজীবন।

সোমবার দেখা যায়, সীতাকুণ্ডের বারআউলিয়ার পূর্বে অবস্থিত ছড়াটিতে সিমেন্টের ব্যাগে তৈরি জিওব্যাগ দিয়ে আড়াআড়িভাবে উঁচু বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে একদিকে ছড়ার নিম্নভাগ শুকিয়ে গেছে। অন্যদিকে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি একটি নির্দিষ্ট কূপে জমা হচ্ছে। যা ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস তাদের মোটর পাম্প দ্বারা প্রায় ৫শ মিটার লম্বা পাইপ দিয়ে কারখানায় সরবরাহ করছে। অথচ বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ঠিক পূর্বে অবস্থিত এই ছড়াটি।

বাঁধের দক্ষিণ পাশে ইউনিটেক্সের সীমানা নির্ধারণের কাজও চলমান রয়েছে। সীমানা নির্ধারণে ছড়ার পাড়ে নির্মাণ করা হয়েছে মাটির উঁচু বাঁধ। এই বাঁধের মাটিগুলো গড়িয়ে পড়ছে ছড়ায়। ফলে ছড়াটি ভরাট হয়ে দিনদিন সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকায় জলাবদ্ধতার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢল নামার পথ হওয়ায় বন্যা থেকে বাঁচার একমাত্র ভরসা ছড়াটি। কিন্তু বাঁধ দিয়ে ছড়াটিকে পানি চলাচলের অনুপযোগী করে তোলায় আগামী বর্ষায় আমাদের বাড়িঘর ডুবে যেতে পারে। সবাই দেখলেও ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস এর একক রাজত্বের কাছে যেন সবাই হার মানছে ।

স্হানীয় এক কৃষক বলেন, প্রতি বছর আমরা জিঙ্গা, করলা, শসা, বরবটিসহ হরেক রকম সবজি চাষ করি। এসব সবজি উৎপাদনে পানি প্রয়োজন। কিন্তু ইউনিটেক্সের পানি উত্তোলনের কারণে ক্ষেতে সেচ দেওয়া যায় না। আমরা পানির অভাবে চাষাবাদ করতে পারছি না।

স্থানীয় বাসিন্দা দিদারুল আলম বলেন, বর্ষাকালে পাহাড়ি ঢল নামার পথ হওয়ায় বন্যা থেকে বাঁচার একমাত্র ভরসা ছড়াটি। কিন্তু বাঁধ দিয়ে ছড়াটিকে পানি চলাচলের অনুপযোগী করে তোলায় আগামী বর্ষায় আমাদের বাড়িঘর ডুবে যেতে পারে। সবাই দেখলেও ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস এর একক রাজত্বের কাছে যেন সবাই হার মানছে ।

পানি আইনে আছে, বাঁধ দ্বারা সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ও পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে অনধিক ৫ বছর কারাদণ্ড অথবা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলার প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই পাহাড়ি ছড়ায় অবৈধভাবে বাঁধ দিয়েছে ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস।

এই বিষয়ে ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস কর্তৃপক্ষের কেউ বক্তব্য দিতে রাজি হন নি।

এইবাংলা /তুহিন

Exit mobile version