22 C
Dhaka
Thursday, February 13, 2025
More

    মাছ ধরার ঐতিহ্যবাহী পলো বাওয়া উৎসবে মাতোয়ারা নাটোরের গুরুদাসপুরবাসী

    আরও পড়ুন

    আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:-

    পলো বাওয়া উৎসব গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। আবহমান কাল ধরে গ্রামের মানুষ এই উৎসবটি পালন করে আসছে। আগে কার দিনে বছরে একবার এই উৎসবটি পালন করতো চলনবিল পাড়ের লোক জন।
    উৎসবের এক সপ্তাহ আগে গ্রামে-গঞ্জে তেলেরটিন এবং ঢোল বাজিয়ে জানিয়ে দেয়া হতো উৎসবের তারিখ। এমন খবর জানার পর লোকজন পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে বাজার থেকে নতুন পলো ক্রয় করতেন।

    উৎসবের দিন সকালে নিজ নিজ পলো, হাতজাল, উড়াল জাল ও লাঠিজাল সহ নানা ধরণের মাছ ধরার জিনিস পত্র নিয়ে বিলের পাড়ে গিয়ে সমবেত হতেন সকলে। ঘড়ির কাটায় নির্ধারিত সময় বাঁশি বেজে উঠলেই সবাই মিলে এক সঙ্গে পলো নিয়ে পানিতে ঝাপিয়ে পড়তেন। আবার কেউ কেউ বিভিন্ন ধরণের জাল দিয়েও মাছ শিকার করে অনেকটা আনন্দ পেতেন।

    বর্তমান সময়ে কালের গর্বে সেই উৎসবটি বিলিন হতে চলেছে। নতুন প্রজন্মের অনেক ছেলেরা পলো বাওয়া উৎসবকি সেটা বুঝেনা। কিন্তু সেই উৎসবটি ধরে রেখেছেন চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বেশকয়েকটি গ্রামের মানুষ।

    পলো দিয়ে মাছ ধরার এই উৎসবের উদ্দেশ্য হলো, এই মৌসুমে মানুষকে মাছ ধরতে উজ্জীবিত করা। তাই প্রতি বছর এই সময় এলেই দল বেধে লোকজন বিলের মধ্যে পলো হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মাছ ধরতে। আর এতে শরু হয় মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। তবে স্থান ভেদে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে এই উৎসবটি পালন করা হয়।

    গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আত্রাই নদীতে পলো দিয়ে চলে মাছ ধরার উৎসব।

    এ সময় উপজেলার ধামাইচ বাজার, হেমননগর, মাগুড়া বিনোদ, হামকুড়িয়াসহ বেশকয়েকটি গ্রামের ছেলে-বুড়োসহ ২ শতাধিক মানুষ কারোও হাতে পলো, ছিটকিজাল, উড়ালজাল, লাঠিজাল, হাতজাল (ঠেলাজাল) নিয়ে ছুটে আসেন নদীর পাড়ে। তারা মনের আনন্দে মাছ শিকার করেন। শোল, বোয়াল মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে বেশ খুশি তারা।

    চাটমোহর উপজেলা থেকে আসা মাছ শিকারী হাফিজুল ইসলাম বলেন, বছরের দু একদিন মাছ শিকার করার জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষা করি। সবাই মিলে এক সঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। তবে দিন দিন পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রতিকুলতার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ নদীতে সুতিজাল, কাঠা দেওয়ার কারণে পলো বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। প্রাচীন এ উৎসব টিকিয়ে রাখতে হলে সবার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন

    তিনি বলেন, সকাল থেকে আজকে মনের আনন্দে পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দেন উপজেলার কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে পলো বাওয়া উৎসব।

    গুরুদাসপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, পলো বাওয়ায় ধরা পড়া মাছের মধ্যে শোল ও বোয়ালই বেশি। আর পলো বাওয়া উৎসবের আনন্দ যুবক-বৃদ্ধের চেয়ে ছোট ছোট শিশুদের মধ্যে একটু বেশি। তারা তাদের বাবা-চাচা-দাদা-মামা-ভাইয়ের হাত ধরেই উৎসবে শরিক হয়।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর