::: দিলিপ দাশ, রাজস্থলী প্রতিনিধি :::
কদিন গেলেই পার্বত্য জেলাগুলো মেতে উঠবে “সাংগ্রাইমা ঞিঞি ঞাঞা” সুরে। পার্বত্য অঞ্চলে শুরু হতে যাচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই ও জলকেলি উৎসব । পুরানো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে এই উৎসবের আমেজ।
রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান বৌদ্ব সম্প্রদায় মানুষের সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে উৎসবের নানান রঙে সাজতে শুরু করেছে পুরো তিন পার্বত্য জেলা। পাহাড়ের সাংগ্রাই উৎসবের ঘিরে আনন্দিত মারমা সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠিরা।
এদিকে, নতুন বছর বর্ষবরণকে ঘিরে আদিবাসী পল্লীগুলোতে ইতিমধ্যে শুরু করেছে নানান প্রস্তুতি । পিঠা তৈরি, ঘর সাজানো থেকে শুরু করে নতুন জামা-কাপড় কিনতে স্থানীয় বাজার ও মার্কেট গুলোতে পড়েছে কেনাকাটা ধুম। ছোট থেকে সকল বয়ষ্কের মানুষ নিজেকে রাঙিয়ে দিতে ব্যস্ততা পাড় করছেন অনেকেই। শুধু বাজার নয় বিভিন্ন পাড়া মহল্লায়ও চলছে পুরোদমে নানান প্রস্তুতি। তাছাড়া সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে তিনদিনব্যাপী পানি খেলা, পিঠা তৈরি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা আয়োজন করা হয় এই দিনে। মৈত্রী পানি বর্ষণের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস-সব মিলিয়ে পুরো জেলার সবক’টি সম্প্রদায়ের মানুষ একাট্টা হবে এই নতুন বছরকে বরণ করে নিতে।
১৪ এপ্রিল পার্বত্য জেলায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্যদিয়ে মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাই উৎসবকে স্বাগত জানাবে। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ২ দিনব্যাপী উৎসব চলবে। উৎসবের মধ্যে রয়েছে সমবেত প্রার্থনা, জলকেলি (পানি খেলা), পিঠা তৈরি, ঘিলা খেলা, বৌদ্ধ মূর্তি স্নান, হাজার প্রদীপ প্রজ্বালন, বয়স্ক পূজা ও নিজস্ব ঐতিহ্যবাসী নৃত্য-গানসহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়াও পার্বত্য এলাকায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে প্রতি বারের ন্যায় এবারও সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদ আয়োজন করেছে মনোরম অনুষ্ঠান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাংগ্রাই আগমনের ফলে পাহাড়ি গ্রামগুলোতে শুরু হয়েছে প্রস্তুতির ধুম। যুবকরা ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে মৈত্রী পানি বর্ষণের বাঁধভাঙা। গ্রামে গ্রামে ঘর পরিষ্কার – পরিছন্নতা ও ঘর সাজানোতে ব্যস্ততা সময় পার করছেন তরুণীরাও। আশেপাশে ঘরের আঙ্গিনা সাজাতে শুরু করেছে বিভিন্ন রকমারি ফুল দিয়ে । আগাম প্রস্তুতির নিতে এরই মধ্যে ব্যস্ততার ধুম পড়েছে পাহাড়ি গ্রামের তরুন-তরুনীদের মাঝে। বিভিন্ন বার্মিজ মার্কেটসহ পাহাড়িদের নিজ পছন্দের কেনাকাটা করতে ভীড় জমিয়েছেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠিরা। বিভিন্ন ফুলের ও রঙ্গের আদলে তৈরি থামি সেট, লুঙ্গি ও শার্ট সাংগ্রাই গেঞ্জি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধরা।
এই দিনে নতুন বছরকে বরণ করতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মাবলম্বীরা নানান কর্মসূচি হাতে নিয়ে থাকেন। এই দিনে পরিশুদ্ধ জল মাধ্যমে পুরানো দিনর গ্লানি মুছে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। দুইদিনব্যাপী নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের এই সাংগ্রাইং (নববর্ষ) উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে।
এইবাংলা/তুহিন