নেওয়াজ তুহিন ::
চট্টগ্রামে মেট্টোরেল প্রকল্পের কাজের উদ্ভোধন করা হয়েছে । কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোইকা এই ফিজিবিলিটি স্টাডি করবে। বলা হচ্ছে ৭০ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত ফিজিবিলিটি স্টাডিতেই চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের প্রয়োজনীয়তা, ব্যবহার উপযোগিতা, মেট্রোরেলের রুটসহ নানা বিষয় উঠে আসবে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ ।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সুত্রমতে এর আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পুর্ণ নিজেদের খরচে করার প্রস্তাবনা দিয়েছিলো চীনা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানী-উইটেক জেবি । চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাথে ‘ ম্যাসিভ রেল ট্রান্সফোর্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে এমইইউ স্বাক্ষর করেছিলো প্রতিষ্ঠানটি । শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা’ যাচাই করার দায়িত্ব পেল কোরিয়ান পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোইকা । তবে এরজন্য সরকারের ব্যয় হবে ১৩ কোটি টাকা ।
এরআগে ‘ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কন্সট্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা থেকে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে ।
মেট্রোরেলের ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে চট্টগ্রামবাসীর জন্য একটি শুভদিন, আনন্দের দিন। কারণ চট্টগ্রামে মেট্টোরেল হবে চট্টগ্রামের মানুষও অনেকে ভাবেনি, এটি আমার জন্যও আনন্দের দিন। বেশ কয়েকবছর ধরে চট্টগ্রামে মেট্টোরেল নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রীর কাছে বহুবার নিবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আজকে কোরিয়ান সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি শুরু হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে বিশ্ব মন্দা চলছে, সংকটময় বিশ্ব পরিস্থিতি, ‘ এই পরিস্থিতির মধ্যে অনেক প্রকল্পের কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে সরকার। বিশ্বময় অনেক প্রকল্পের কার্যক্রম ধীরগতি হয়ে গেছে। সেই পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী এই চট্টগ্রামে মেট্টোরেল নির্মাণের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ‘
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায় , এই প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত করা না হলে শেষ পর্যন্ত ফিজিবিলিটি স্টাডির পেছনে করা ব্যয়ই গচ্চা যাবে । এরআগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন একটি ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শেষ করলেও , সেটি আলোর মুখ দেখেনি । তবে , ইতিমধ্যে এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে মেট্টোরেলের রুট পরিবর্তন জরুরী হয়ে পড়বে । নগরীতে মেট্টোরেল হবে না কি মনোরেল হবে সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করা হয় নি । তবে সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি সুত্রমতে, ঢাকায় মেট্টোরেলের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। এরআগেই কোইকা প্রকল্পটির ফিজিবিলিটি স্টাডি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কোরিয়ান কোম্পানির আগ্রহের বছরখানেক আগেই চীনা কোম্পানি চায়না কনস্ট্রাকশন কোম্পানি বা সিসিসিও প্রকল্পটি নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে ফিজিবিলিটি স্টাডি করার আগ্রহসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দাখিল করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোইকাকে চট্টগ্রামের মেট্রোরেল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি করার দায়িত্ব দেয়া হলো।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন , চট্টগ্রামে দিনে দিনে জনসংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে শহরের আয়তন। মীরসরাই ইকোনমিক জোন কিংবা টানেল চালু হওয়ার পর দক্ষিণ চট্টগ্রামে যেভাবে শহর বিকশিত হবে তাতে মেট্রোরেল প্রকল্প অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। ‘