::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::
মঙ্গলবার বেলা ১ টা ১৫ মিনিটে পদ্মা বহুমুখী সেতু দিয়ে পরীক্ষা মূলক বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ফরিদপুরের ভাঙা রেলস্টেশন থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত পরীক্ষা মূলক এ বিশেষ ট্রেন যোগাযোগ দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন পরিবর্তন আনবে।
গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা সেতু সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর প্রথম খুলেছিল দক্ষিণের সড়ক পথের দুয়ার। রেললাইন কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেললাইন সকলের জন্য উন্মুক্ত করার আশা প্রকাশ করেন। রেল যোগাযোগ শুরু হলে দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবন যাত্রায় নতুন হাওয়া বইবে।
মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) দুপুর ১ টা ১০ মিনিটে ভাঙা রেলওয়ে স্টেশনে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বিশেষ ট্রেনটির চলাচল ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন করেছেন।
রেলমন্ত্রীর উদ্ধোধনের পর বিশেষ বগিতে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সাথে বগিতে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ নুরে আলম লিটন চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, মাদারীপুর-৩ আসনের সাংসদ আব্দুস সোবহান গোলাপ, শরীয়তপুর-১ আসনের সাংসদ ইকবাল হোসেন অপু, শরীয়তপুর-৩ আসনের সাংসদ নাহিম রাজ্জাক, ফরিদপুর ৪ আসনের সাংসদ মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের প্রধান স্বমন্বয়ক মেজর জেনারেল একেএকম রেজাউল মজিদ, ডেপুটি সম্বন্বয়ক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম আজাদ, প্রকল্প ব্যবস্খাপক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইদ আহমেদসহ ফরিদুপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার প্রমুখ এ বিশেষ যাত্রায় উপস্থিত ছিলেন।
এসময় পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৪২ নম্বর পিয়ার ও পদ্মা সেতু পেরিয়ে মাওয়া প্রান্তের ১ নম্বর পিয়ারের কাছে আতশবাজি ফাটিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়। পদ্মা সেতুর রেললাইন প্রকল্পের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও স্থানীয় জনতা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
ভাঙা-মাওয়া রেল লিংক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাইদ আহমেদ(এনডিসি, পিএসসি) বলেছেন, প্রকল্পটির সাথে জড়িত আমরা সবাই উচ্ছ্বসিত। ট্রেন পরীক্ষামূলক পদ্মা সেতুর রেললাইনে চলাচল শুরু হয়েছে। আশা করি চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে যাত্রী সাধারণের জন্য ট্রেন উন্মুক্ত করতে পারব।
এর আগে গত বুধবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬ টায় পদ্মা সেতুর রেললাইনের সর্বশেষ ৭ মিটার কংক্রিট ঢালাই সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পাথর বিহীন রেলপথ নির্মাণ সমাপ্ত হয়। ৭ মিটার কংক্রিট ঢালাই সম্পন্ন করার মধ্য দিয়ে ভাঙা স্টেশন থেকে মাওয়া স্টেশন পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এই ৪২ কিলোমিটার রেলপথ দিয়ে ৫ টি বগি বিশিষ্ট বিশেষ ট্রেনটি চলাচল শুরু করলো। এছাড়াও গত বছরের ১ লা নভেম্বর ভাঙা স্টেশন থেকে জাজিরা প্রান্ত পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার রেলপথে পরীক্ষা মূলক ট্রেন চলেছিল।
সেতুর রেল লিংক প্রকল্পের অগ্রগতির প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকা-যশোরের পুরো কাজের অগ্রগতি ৭৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্পের অধীনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চীনের চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী (সিআরইসি)।
এইবাংলা/হিমেল