22 C
Dhaka
Friday, February 14, 2025
More

    নাটোরের উত্তরা গণভবন, নয়নাভিরাম ফুলের স্বর্গরাজ্য

    আরও পড়ুন

    আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:

    নাটোরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিধন্য উত্তরা গণভবনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ করবে যে কোন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষকে। প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বাসভবন নাটোর ‘উত্তরা গণভবন’। গণভবনের মূল ফটক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই দুপাশের সারি সারি গাঁদা ফুল দর্শনার্থীদের বরণ করছেন। এ যেন এক ফুলের স্বর্গরাজ্য। এসব বাহারি প্রজাতির ফুলগুলো জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্ত আসতে আর দেরি নেই।

    সবুজের বুকে লাল, নীল, হলুদ, সাদাসহ নানান প্রজাতির ফুলগুলো দর্শনার্থীদের হাত বাড়িয়ে ডাকছেন। ফুলের মিষ্টি গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো গণভবন চত্বরে। সেই গন্ধে ফুলে ফুলে ঘুরছে মৌমাছি-প্রজাপতি।

    দেশের বিভিন্ন প্রান্তর থেকে প্রতিদিন গণভবনে ঘুরতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীদের নজর কাড়ছে বাহারি রংয়ের এসব ফুল। ফুলের অপরূপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে ফুলের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলতে ব্যস্ত দর্শনার্থীরা। অনেকে প্রকৃতির প্রেমে পড়ে মন ভরে ঘ্রাণ নিচ্ছেন। শুধু বড়রা নয়, বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও ফুলের সঙ্গে আনন্দে মেতেছে। এ বছর উত্তরা গণভবন চত্বর জুড়ে ২১ প্রজাতির ২৫ হাজার ফুল গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। যার মধ্য রয়েছে-গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, নয়নতারা, সিলভিয়া, জিনিয়া, চন্দ্রমল্লিকাসহ নানান প্রজাতির ফুল। এছাড়াও দেশ-বিদেশের বিরল প্রজাতির ফুলও ফুটেছে। যার মধ্যে-সাদা অ্যারামন্ডা, হোয়াইট পয়েন্সেটিয়া, পারিজাতসহ বাহারি প্রজাতির ফুল।

    গণভবনে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী নাজনীন আক্তার বলেন, শীত মৌসুমে একবার করে গণভবনে ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসি। এ বছর স্বামী, সন্তান নিয়ে এসেছি। পুরো গণভবনে ফুলের গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এখানকার ফুলগুলো অনেক সুন্দর। এসব ফুল খুব কম দেখা যায়। প্রতিবছর ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দেখতে আসি।

    বগুড়া থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী সুমাইয়া বলেন, উত্তরা গণভবন প্রাচীন একটি স্থাপনা। বিশেষ করে ইতালিয়ান গার্ডেন অনেক চমৎকার। যতবার দেখি, তত মন ছুয়ে যায়। শীত মৌসুমে গণভবনে প্রচুর ফুলের গাছ রোপন করা হয়। এতে করে গণভবনের সৌন্দর্যকে কয়েক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। আমার পচ্ছন্দের একটি পর্যটন স্থান। প্রতি বছর একবার হলেও স্বামী-সন্তান নিয়ে ঘুরতে আসি। স্বচ্ছ সবুজ ঘাস আর বাহারি ফুল দেখতে দারুন অনুভূতি। ঘাসে বসে গল্প ও আড্ডা করার মতো স্থান। সব মিলে বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যময় এ গণভবন।

    রাজশাহীর পুঠিয়া থেকে আসা লাবনী সরকার বলেন, আমাদের আশপাশে এমন চমৎকার পর্যটন স্থান আছে যা না আসলে জানতাম না। সত্যই অনেক সুন্দর একটি স্থান। রাজবাড়িটি দেখে বুঝার উপায় নেই, যে স্থাপত্য ৩শ বছর আগে নির্মিত। রাজবাড়ির ভেতরে অজানা অনেক গাছ দেখলাম, যা আগে কোথাও দেখিনি। সবমিলে সবুজের মাঝে একটু স্বস্তি পেতে এ রাজবাড়িটি অন্যতম। নিরিবিলি আর সবুজ গাছপালা ছায়াযুক্ত স্থান। সব মিলে চমৎকার রূপে সেজেছে রাজবাড়িটি।

    পাবনা সদর থেকে আসা শিক্ষক আব্দুল লতিফ বলেন, এ গণভবনে যতবার এসেছি, ততবার মুগ্ধ হয়েছি। বার বার গণভবনের প্রকৃতির প্রেমে পড়েছি। আশপাশের মধ্য অন্যতম একটি পর্যটন স্থান। ২০১৯ সালে স্কুল থেকে প্রথম শিক্ষাসফর এসেছিলাম। তারপর থেকেই এ গণভবনের প্রকৃতির প্রেমে পড়ে গিয়েছি। প্রতিবছর পরিবার নিয়ে এক থেকে দুইবার আসা হয়। মূল প্রাসাদের সামনে দারুণ সব রকমারি ফুল গাছ রোপন করে চিত্রকর্ম করা হয়েছে। রাশি রাশি এত ফুল খুব কম দেখা যায়। অসাধারণ ছিল ফুলগুলো।

    জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, উত্তরা গণভবনে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন। তাদের আনন্দ দেওয়ার জন্য উত্তরা গণভবনে ২১ প্রজাতির ২৫ হাজার ফুলের চারা রোপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুরো গণভবন ফুলে ফুলে সজ্জিত হয়ে উঠেছে। দর্শনার্থীদের আনন্দ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেবে আমাদের এই চমৎকার ফুলের বাগান। প্রতিনিয়তই মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা

    উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নাটোর দিঘাপতিয়া রাজবাড়িকে ‘উত্তরা গণভবন’ নামকরণ করেন। বঙ্গবন্ধু উত্তরা গণভবনের মূল প্রাসাদের ভেতরে মন্ত্রীসভার বৈঠকও করেন। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে উত্তরা গণভবনে মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছিল।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর