22 C
Dhaka
Thursday, February 13, 2025
More

    দুপুরে মামলা রাতে শিশু আবিদার মরদেহের সন্ধান

    বর্ষা ও আয়াতের পর এবার আবিদা

    আরও পড়ুন

    ::: খান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ :::

    শেষ পর্যন্ত পরিবারের আশংকাই সঠিক প্রমানিত হলো। মাদ্রাসা ছাত্রী আবেদা সুলতানাকে (১১) ধর্ষণের পর বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেছে ঘাতক রুবেল।  নিখোঁজ হবার নয়দিনের মাথায় আলম তারা পুকুরপাড় এলাকা থেকে  আবিদার মরদেহ উদ্ধার করেছে পিবিআই। ঘাতক রুবেলের দেখিয়ে দেয়া স্থান থেকেই বস্তাবন্দি অবস্থায় আবিদা সুলতানা আইনীনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

    রুবেলের ভাষ্যমতে, ধর্ষণ করে  ওই শিশুটিকে বালিশচাপা দিয়ে গত ২১ মার্চ হত্যা করা হয়। ঘাতক রুবেলের এমন স্বীকারোক্তির কথা নিশ্চিত করেছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।

    মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শারমিন জাহানের আদালতে শিশুটির মা বিবি ফাতেমা বাদী হয়ে  মামলার আবেদন করেছিলেন। তিনি রুবেল নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করার পর বুধবার ভোর রাতে আবিদাকে জীবিত ফেরত হবার সব আশা শেষ হয়৷ আবিদার পরিবারের অভিযোগ পুলিশ প্রথম থেকে তৎপর হলে এমন পরিণতি হতো না আবিদার৷

    পারিবারিক সুত্র জানায়, ২১ মার্চ দুপুরে চট্টগ্রামের পাহাড়তলী থানাধীন আব্দুর কাজীর দিঘীরপাড়া এলাকা হতে মাদ্রাসা ছাত্রী আবেদা সুলতানা আইনীন(১১) নিখোঁজ হয়। রুবেল শিশু আবিদাকে বিড়াল ছানা এনে দেবার প্রলোভন দেখিয়ে ঘর থেকে বের করেছিলেন।

    পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো টিম ছায়া তদন্তের মাধ্যমে নিখোঁজের রহস্য উম্মোচন করে এক সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার ভোর রাতে আবিদার মরদেহের সন্ধান পায় পিবিআই। পিবিআই কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে নিখোঁজ শিশু আবিদার মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চালায়।

    চট্টগ্রাম মহানগর পিবিআইর ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) কাজী এনায়েত কবির বলেন, ‘আসামি রুবেল আমাদের মিসগাইড করেছে। তবে সে আমাদের নজরদারিতেই ছিল। বুধবার ভোরে সে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করে নেয়।’

    পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, ‘সে (রুবেল) প্রথমে শিশুটিকে ধর্ষণ করে এবং পরে বালিশচাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে। সে যেহেতু সবজি বিক্রেতা, সে সবজির ঝুঁড়িতে করে মরদেহ এনে ফেলেছে।’

    পারিবারিক সুত্রমতে,  কয়েকদিন আগে ভুক্তভোগী শিশুটি তার মাকে জানায়, স্কুলের এক বান্ধবী বিড়ালছানা কিনেছে। সেই সময় আবিদা তার মাকে অনুরোধ করে, তাকেও একটি বিড়াল ছানা কিনে দিতে। মা তাকে বেতন পেলে কিনে দেবে বলে আশ্বাস দেয়। পরে আবিদা তার মাকে বলে রাস্তার তরকারি বিক্রেতা তাকে বিড়াল ছানা এনে দেবে। এরপর শিশুটির মা তাকে তার কাছে যেতে বারণ করে।এমন কথপোকথনের কয়েকদিন পর  গত ২১ মার্চ ভুক্তভোগী শিশু স্কুলে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। পরে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ঘটনার দিন এবং তার আগের দিন ভুক্তভোগীকে মামলার অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

    রুবেলের দেখানো স্থান থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার

    বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসান বলেন , গত ২১ মার্চ স্কুলের যাওয়ার পথে শিশুটিকে বিড়াল ছানা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে স্থানীয় তরকারি বিক্রেতা মো. রুবেল অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ ঘটনা সিসিটিভির ফুটেছে ধরা পড়েছে।ঘটনার পরপরই বিষয়টি থানাকে অবহিত করা হলেও পুলিশ আসামি রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। এরপর থেকে সে দাড়ি কেটে ও বেশভূষা পরিবর্তন করে এলাকায় অবস্থান করছে।’

    ঘাতক সবজি বিক্রেতা রুবেল

    আইনজীবী ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নিখোঁজ হবার পরপর পুলিশ তৎপর হলে আবিদাকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হতো।নিখোঁজ আবিদা সুলতানা আয়নীন ওরফে আঁখি মনি (১০) পাহাড়তলি এলাকার আব্দুল হাদি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। পাহাড়তলীর আব্দুর কাজীর দীঘির পাড় এলাকায় তাদের বাসা।শিশুটির মা মোছাম্মৎ বিবি ফাতেমা (২৬) পোশাক কারখানার কর্মী। শিশুটির বাবা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন।মামলায় আসামি করা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা মো. রুবেলকে (৩৫)। রুবেল ওই এলাকার তরকারি বিক্রেতা।

    এইবাংলা/হিমেল

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর