22 C
Dhaka
Thursday, February 13, 2025
More

    স্বাধীনতার চেতনা আওয়ামী লীগের মুলধন-খসরু

    আরও পড়ুন

    ::: নাদিরা শিমু :::

    বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের কোন কিছুতেই স্বাধীনতা নেই। একটি দল স্বাধীনতার ইতিহাসকে তাদের রাজনীতির মুলধন হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা সমাজে অবহেলিত।

    রবিবার (২৬ শে মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, ‘ স্বাধীন দেশের নাগরিকরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারছে না। ভোটের অধিকার লুট করে বর্তমান অবৈধ সরকার জনগণের উপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালাচ্ছে৷ দেশের অর্থনীতিকে ধংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে। ‘

    তিনি বলেন,  মুক্তিযুদ্ধ ইনক্লুসিভ (অন্তর্ভুক্তিমূলক) বিষয়। এটি কোনো একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। এটি পুরো জাতির গর্ব। এই মূলধন পুরো জাতির মূলধন। এ গর্ব পুরো জাতির গর্ব। জাতিরাষ্ট্র গঠনের পথ-পরিক্রমায় মাওলানা ভাসানী, সিরাজুল আলম খান, জিয়াউর রহমান পাকিস্তান সেনা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, কাদেরিয়া বাহিনীসহ যার যাঅবদান ও ঐতিহাসিক কর্মকাণ্ড সেটা স্বীকার করতে হবে। কারো অবদান অস্বীকার করে শুধু একজন ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠা করার অপচেষ্টা ইতিহাসের ভয়াবহ বিকৃতি। সরকারকে বিকৃত ইতিহাসের বয়ান থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের কেউ একক দাবীদার নয়, সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল।

    বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রামের সদস্যসচিব খুরশীদ জামিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, পরিষদের আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সদস্যসচিব কাদের গণি, পরিষদের চট্টগ্রামের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, সদস্যসচিব আবুল হাশেম ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান।

    সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এবং ডা. শামীম আল মামুন ও ডা. ঈসা চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সংবর্ধিত অতিথি বিএনপির উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান।

    আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম ফজলুল হক, ডা. মো. গোফরানুল হক, একরামুল করিম, ডা. জাহিদ হোসেন শরীফ, এড. মফিজুল হক ভুঁইয়া, কমান্ডার শাহাবুদ্দিন ও মো. হারুনুর রশিদকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করেন।

    আমীর খসরু বলেন, কোনো জায়গায় কোনো নেতৃত্বে এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন জাতির পিতা বা ফাউন্ডার ফাদার অথবা কোনো একজনের ব্যক্তিত্বে স্বাধীনতা আসেনি। এটা যদি করা হয়ে থাকে অর্থাৎ একজনকে সামনে রেখে সমস্ত স্বাধীনতার যুদ্ধ তাহলে এটা কিন্তু মনোপলি হয়। যখন স্বাধীনতা মনোপলি হবে তখন এটা ক্ষতিকর জিনিস। বাজার যেরকম একচেটিয়া হলে ক্ষতিকর হয়, খদ্দেররা ক্ষতিগ্রস্থ হয়, মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারেও মনোপলি করতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে একটি বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা হয়েছে।

    জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে আমির খসরু বলেন, আমি যা বলেছি এসব তাজউদ্দীনের মেয়ের বইতে লেখা আছে। যে ফাদার অফ দ্যা নেশন ঠিক আছে, আমেরিকায় তো ফাদার অফ নেশন আছে, ফাউন্ডিং ফাদারও আছে। যে লোকগুলোর কথা আমি বলেছি এর বাইরেও অনেকেই আছেন। যাদের নাম ফাউন্ডিং ফাদার হিসেবে আমাদেরকে স্বীকৃতি দিতে হবে। তারা সবাই ফাউন্ডিং ফাদার্স। কারো ভূমিকা কম নয়। একেকজনের ভূমিকা একেক দিকে। জিয়াউর রহমানের ভূমিকা হচ্ছে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না?

    আমীর খসরু বলেন, জেনারেল ওসমানি সাহেব মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন। উনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না? তাজউদ্দিন সাহেব স্বাধীনতাকালীন মন্ত্রীসভার নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি কি ফাউন্ডিং ফাদার হতে পারেন না।  এটি কোনো একটি নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হতে পারে না। এটি সমস্ত জাতির গর্ব। এই মূলধন সমস্ত জাতির। এ গর্ব সমস্ত জাতির। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এসব বিষয় দেখা হবে। যারা প্রাণ দিয়েছেন প্রত্যেকের নাম বাংলাদেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।

    প্রধান বক্তার বক্তব্যে প্রফেসর ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে আমরা লড়াই করছি গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের রক্ষার জন্য। অর্থনৈতিক যে বৈষম্য যেটা ৭১ এ ছিল সেটা এখন আরো বেশী হয়েছে। মানবাধিকার ও মানুষের মুক্তির যে লড়াই সেটা অব্যাহত আছে। কাজেই আমাদের আজ শপথ নিতে হবে গণতন্ত্র রক্ষার লড়াইয়ে সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এক হয়ে শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে হবে।
    এস এম ফজলুল হক বলেন, স্বাধীনতা কোন পণ্য নয়। স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে অনেক কথা থাকতে পারে। কিন্তু যে গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতা, সে গণতন্ত্র ছাড়া দেশের মানুষ ভাবতে পাওে না।

    ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং জিয়াউর রহমানের নাম সমার্থক। মুক্তিকামী জনতা সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা আশা করেছিল রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে। কিন্তু তাদের ব্যর্থতার কারণে সেদিন জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সরকার মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

    কাদের গণি চৌধুরী বলেন, এই চট্টগ্রাম থেকে শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এই সত্যটিকে ইতিহাস থেকে মুছে দেয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করছে সরকার। আওয়ামী লীগ সব সময় মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কাজ করেছে।

    জাহিদুল করিম কচি বলেন, আজ দেশে সুশাসন নেই। এ থেকে উদ্ধারের জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিকল্প নেই।

    ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী বলেন, সরকার মানুষের সমস্ত মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। তাই এই সরকারকে পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

    সভায়  উপস্থিত ছিলেন  বার কাউন্সিলের সদস্য এড. এ এস এম বদরুল আনোয়ার, চবি অধ্যাপক এস এম নছরুল কদির, চমেক ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. জসিম উদ্দিন, আইনজীবি সমিতির সভাপতি এড. নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, সাবেক সভাপতি এড: এনামুল হক, জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহ নওয়াজ, এ্যাবের ইঞ্জি. সেলিম মো. জানে আলম, রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মো. ওসমান প্রমুখ।

    এইবাংলা/তুহিন

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর