২০১৮ সালের নভেম্বরে রিটেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিকিউরিটি মানি জমা দিয়ে মাস্টার প্ল্যানের আওতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে কাজীর দেউড়ি এলাকায় এই সৌন্দর্য বর্ধন প্রকল্পের আওতায় জায়গাটি ৫ বছরের জন্য লিজ নেন ফিউসন ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ডিজাইনার ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর লায়ন এম এ হোসেন বাদল। এর মধ্যেই করোনাকালেই চলে যায় ২ বছর। এ সময়ে সব ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন।
হঠাৎ নোটিশ দিয়ে এই লিজ নেওয়া জায়গায় গড়ে তোলা গার্ডেন রেস্টুরেন্ট ‘বাগান বিলাস’ উচ্ছেদ করার কথা জানায় চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এর জন্য আগামী ৩১ মার্চ, ২০২৩ ইং তারিখের মধ্যে এই স্থাপনায় থাকা মালামাল সরিয়ে নিতে লিখিতভাবে জানায় সিজেকেএস। তবে নির্ধারিত সময়ের আগে আজ ১৯ মার্চ, ২০২৩ ইং অবৈধভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এর প্রতিবাদের সংবাদ সম্মেলন করেন ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ব্যবসায়ী বৃন্দ।
লায়ন এম এ হোসেন বাদল বলেন, পুরো প্রকল্পের ওপর উচ্চ আদালতে রিট করলে মহামান্য হাইকোর্ট গত ১৬ মার্চ ওই স্থানে ইনজেকশন জারি করেন। ইনজেকশনের কাগজাদি আমরা রিসিভ করতে গেলে জেলা প্রশাসন কার্যালয় গ্রহণ করেননি। এরপর উচ্চ আদালতের ইনজেকশনের কাগজাদি জেলা প্রশাসনের ইমেল এবং হোয়াটসঅ্যাপে পাঠায়।
তিনি বলেন, তবে সিজেকেএস আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত মালামাল সরিয়ে উচ্ছেদ করার সময় নির্ধারণ করলেও হঠাৎ আজ ১৯ মার্চ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু এমং মারমা মং বাগান বিলাস সহ পুরো প্রকল্পে হাজির হয়ে উচ্ছেদ অভিযানের তোড়জোড় শুরু করেন। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে জানান, চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) জায়গা উদ্ধারের জন্যই তাদের এই উচ্ছেদ অভিযান। তখন আমি ম্যাজিস্ট্রেটকে জানাই, সিজেকেএসের সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত চিঠিতে আমাদের আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে স্থাপনা সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে আমি এ সংক্রান্ত মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশের বিষয়টি তুলে ধরি এবং ১৬ মার্চের মহামান্য হাইকোর্টের ইনজেকশনের আদেশটি দেখাই।
কিন্তু জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নু এমং মারমা মং তখন আমাকে বলেন, ‘আমি জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে এসেছি, আপনারা উনাকে জানান।’ এ সময় মহামান্য হাইকোর্টের ইনজেকশনের বিষয়টি এক সাংবাদিক তুলে ধরলে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, বেশি কথা বললে আপনাকে গ্রেপ্তার করা হবে।
লায়ন বাদল আরো বলেন, এরপর আমি মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার আদেশ নিয়ে ডিসি অফিসে ছুটে যাই। তনে উনি কোন সদুত্তর দেননি। এদিকে তড়িঘড়ি করে আমার স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়ে যায়। একে একে গুড়িয়ে দেওয়া হয় তিল তিল করে গড়ে তোলা স্থাপনা। প্রকল্পের আওতায় দুটি প্রতিবন্ধীদের জন্য দোকান ও একটি পাবলিক টয়লেট ছিল। সেগুলোও গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ সব মিলিয়ে আমাদের প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। মুহূর্তেই কেড়ে নেওয়া হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ১৫২ জন কর্মচারীর মুখের ভাত।
তিনি আরো বলেন, গত ডিসেম্বরে চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগদিতে আসা কর্মী জহিরের পরিবারকে বিনামূল্যে একটি নার্সারি করে দিয়েছিলাম, সেটিও গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য মোশরাফুল হক পাভেল বলেন, বেঁচে থাকার স্বপ্নটা ও পরিবারের আয়ের রাস্তাটা এক নিমিষেই বদলে গিয়েছে। আমি পড়াশোনার পাশাপাশি রাজনীতিতে সময় দিয়েছি, সর্বদা মানুষের কল্যানে নিজের জীবনের পরোয়া না করে কাজ করে গিয়েছি।রাজপথে সংগঠনের কাজে সর্বদা সময় দিয়েছি, অন্যর কাছে কখনো হাত পাতি নাই। নিজের জন্য সর্বদা স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করেছি। তবে, আজ এটার প্রতিফলন পেলাম। কারো বিন্দুমাত্র সাহায্য পেলাম না। ‘
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা স্বাধীন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করার নেপথ্যের কারণ খতিয়ে দেখার দাবি জানায়। একইসঙ্গে বিশাল টাকার অর্থের ক্ষতি ও ১৫২ জন কর্মচারীর বেকার হয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি জানানো হয়।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে ইফতেখার উদ্দিন ইফতি,নাজিম উদ্দিন সাইফুল, সাজ্জাদ উপস্থিত ছিলেন।
এই বাংলা / প্রেস বিজ্ঞপ্তি