::: আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি::
সমাজে প্রচারবিমুখ কিছু মানুষ থাকে,যারা অন্যের জন্য কিছু করতে ভালবাসে।”মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য”এই মহৎ উদ্দেশ্যকে জীবনে ধারণ করে মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করে অনেকই।তেমনি একজন নাটোরের লালপুরের রহুল আমীন রুবেল।যিনি গরীব,এতিম,দুঃস্থ ও অসহায় ৬৫ জন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন নিজের খরচে।
কারও মা নেই, কারও বাবা, কেউ আবার মা-বাবাকে হারিয়ে নানা-নানির বা দাদা-দাদির সংসারে লালিত হয়েছেন। মা-বাবা হারানো এসব মেয়েরা অনেক কষ্টে বেড়ে উঠেছেন।বিয়ের উপযুক্ত এসব মেয়েদের পরম মমতায় পিতৃস্নেহে পাশে দাঁড়িয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করেন ব্যবসায়ী রহুল আমীন রুবেল।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়নের পালোহারা গ্রামে জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে রিমা খাতুন(২০) নামের এক মেয়ের বিয়ের মধ্য দিয়ে ৬৫তম বিবাহ সম্পন্ন করেন।
নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার কদমচিলান ইউনিয়নের পুকুরপাড়া গ্রামের রহমান আলীর ছেলে মো. পলাশ আলীর সঙ্গে এতিম রিমা খাতুনের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বর রূপপুর ইপিজেডে চাকরি করে।
জমকালো আলোকসজ্জা, গেট, কনে ও বরের স্টেজ, কনে সাজানোর জন্য বিউটিশিয়ান, ভিডিও ধারণ কোনো কিছুই যেন কমতি ছিলো না এতিম মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে। বিয়ে অনুষ্ঠানে বরযাত্রীসহ প্রায় ২০০শ অতিথিদের উন্নতমানের খাবারের পাশাপাশি চাইনিজ খাবারও পরিবেশন করা হয়। তারপর বিয়ে সম্পূন্ন হওয়ার পর এতিম রিমাকে স্বামীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ২০০৫ সাল থেকে নিজ খরচে ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল এতিম, গরীব, অসহায় মেয়েদের বিয়ে দিয়ে আসছেন। পাশাপাশি সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার নিজ এলাকার দুস্থ্য মানুষদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ঈদ, বিশেষ দিনসহ বিভিন্ন সময় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করে আসছেন তিনি। তার বাবা মৃত মোয়াজ্জেম হোসেন সরকার জীবিত থাকা সময়ে এই মহৎ কাজ করেছেন। বাবার আর্দশ ধারণ করে তিনিও এমন মহৎ কাজ করে চলেছেন। বাবার রেখে যাওয়া জমি-জমা,ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্থ দিয়েই চলে তার এই কার্যক্রম। যত দিন বাঁচবেন, তত দিন এ কাজ করে যেতে চান তিনি।
স্থানীয় কাউছার হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল ভাইয়ের এমন মানবিক কাজ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি নিজেই রুবেল ভাইয়ের উদ্যোগে অনেক বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি। তার এই মানবিক কার্যক্রম অব্যহত থাকুক। বতর্তমান সময়ে এমন মহৎ মানুষ পাওয়া কঠিন।
রিমার মা রেহেনা বেগম বলেন, কখনও ভাবিনি আমার এতিম মেয়ের এত বড় আয়োজনে বিয়ে হবে। ব্যবসায়ী রুহুল আমীনের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি নিজে দায়িত্ব নিয়ে আমার মেয়ের বিয়ে দিলেন। এত টাকা খরচ করে আয়োজন করেছেন। আমার মেয়ের বাবা বেঁচে থাকলেও হয়তবা এভাবে আয়োজন করা সম্ভব ছিল না। আল্লাহপাক রহুল আমীনকে সুস্থ্য রাখুন দোয়া করি।
ব্যবসায়ী রুহুল আমীন রুবেল বলেন, মহান আল্লাহ পাকের অশেষ কৃপায় এ পর্যন্ত ৬৫টি এতিম মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন করতে পেরেছি। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর গরীব অসহায়দের সেবা করেই বেঁচে থাকতে চাই। সমাজের সকল বিত্তবানরা তাদের আশপাশের গরীব অসহায় দুস্থ্য মানুষদের পাশে দাঁড়ালে হাজারো মানুষ ভাল ভাবে খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবে।
যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এই কার্যক্রম চলমান যেন রাখতে পারি তার জন্য সকলেই দোয়া করবেন। তাই আসুন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলেই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াই।