22 C
Dhaka
Thursday, February 13, 2025
More

    নাজিরহাট পৌরসভার ‘মেয়র’ পদে নৌকার বিজয়

    'ইভিএম ইন্জিনিয়ারিং' বলছেন পরাজিত প্রার্থীরা

    আরও পড়ুন

    ::: ফটিকছড়ি প্রতিনিধি :::

    চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভার নির্বাচনে  মেয়র পদে প্রথমবারের মতো নৌকার প্রার্থী জাহেদ চৌধুরী বিজয় লাভ করেছেন। দশহাজার একশ ৪২ ভোট পেয়ে তিনি বিজয় লাভ করেন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দি স্বতন্ত্র প্রার্থী  আনোয়ার পাশা ( মোবাইল ফোন)। তিনি পেয়েছেন ৭ হাজার একশ  ৭৪ ভোট।

    চট্টগ্রাম অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জান বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়নে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

    নাজিরহাট পৌরসভার নির্বাচনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহন চলে শান্তিপূর্ণভাবে। নাজিরহাট পৌরসভার দ্বিতীয় নির্বাচন এটি।  সর্বমোট ২৬ হাজার ২৯৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এরমধ্যে ৮৩ টি ভোট বাতিল করা হয়েছে। মোট বৈধ ভোট ২৬ হাজার ১৮৩ টি।

    নাজিরহাট পৌরসভা সভায় মেয়র পদে তৃতীয় স্থানে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী  এডভোকেট ইসমাইল গনি ‘জগ’ প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২৯ শত ষাট ভোট।

    নাজিরহাট পৌর নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর মিলিয়ে ১৩টি পদে মোট ৫৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তার মধ্যে মেয়র পদে ভোটে লড়াই করেছেন ৫ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এ কে জাহেদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোবাইল প্রতীকে আনোয়ার পাশা ও চামচ প্রতীকে জাহাঙ্গীর চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জগ মার্কা প্রতীকে ইসমাইল গণি, নারিকেল গাছ প্রতীকে নাসির উদ্দিন চৌধুরী।

    এবারের নির্বাচনে বিএনপি দলগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপিমনা প্রার্থী মো: নাসির নারিকেল প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ভোট ৫ শ ৯২ ভোট।

    স্বাধীনতার পর থেকে নাজিরহাটকে বিএনপির ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গত পৌরসভার নির্বাচনেও ধানের শীষের প্রার্থী অর্ধেকের বেশি ভোটের ব্যবধানে বিজয় লাভ করেছিলেন। একারণে এবারে ইভিএমে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন পরাজিত প্রার্থীরা। অভিযোগ উঠেছে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে।

    ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী জাহেদ চৌধুরী ( নৌকা) ও আনোয়ার পাশা ( স্বতন্ত্র) ১৭ হাজার ৩১৬ ভোট পেয়েছেন যা মোট ভোটের ৬৫.৮৪ শতাংশ। দুইজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া অধিকাংশ  কাউন্সিলর পদে গতবারের কাউন্সিলররাই বিজয়ী হয়েছেন।

    তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, নির্বাচনে বিএনপির দলগতভাবে অংশগ্রহন করেনি। সেকারণে ভোট বিশ্লেষণ দলগতভাবে বিবেচনায় নেয়া সঠিক হবে না।

    স্বতন্ত্র প্রার্থী (জগ মার্কা) এডভোকেট  ইসমাইল গণি বলেন,’ আমাকে অনেক কেন্দ্রে ডুকতে দেয়া হয় নাই। পুলিশ দিয়ে এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। ইলেকশন ম্যাকানিজম করা হলে ভোটের নাম মশকরা করার দরকার কি?  ‘

    ‘আমাকে অনেক কেন্দ্রে ডুকতে দেয়া হয় নাই। পুলিশ দিয়ে এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়া হয়েছে। ইলেকশন ম্যাকানিজম করা হলে ভোটের নাম মশকরা করার দরকার কি?

    বিএনপির একাধিক সুত্র জানিয়েছে , নৌকার প্রার্থী জাহেদ চৌধুরীর পক্ষে মাঠে সরব ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও গতবারের সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী  কর্ণেল বাহারের অনুসারীরা। কর্ণেল বাহারের সাথে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত মেয়র জাহিদ চৌধুরীর ব্যবসায়ীক সম্পর্ক রয়েছে। সেকারণে উপজেলা বিএনপির একটি অংশ ভোটের মাঠে নৌকার পক্ষে সক্রিয় ছিলেন।

    এদিকে, বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী কাউন্সিলর হিসেবে ১ নং ওয়ার্ড জয়নাল (বর্তমান ), ২ নং ওয়ার্ডে আমান উল্লাহ , ৩ নং ওয়ার্ডে ওসমান গনি , ৪ নং ওয়ার্ডে শাহাজান,  ৫ নং ওয়ার্ডে মোস্তাফা কামাল, ৬ নং  ওয়ার্ডে মাওলানা ইয়াকুব  (বর্তমান কাউন্সিলর  ), ৭ নং ওয়ার্ডে মন্জুরল মিয়া, ৮ নং ওয়ার্ডে মুহাম্মদ আলী – ( বর্তমান কাউন্সিলর) ৯ নং ওয়ার্ডে মো: সোলাইমান – (বর্তমান কাউন্সিলর) জয় লাভ করেছেন।

    সরেজমিনে, বেলা সাড়ে বারোটার দিকে ইন্জিনিয়ার নুর মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়,  পূর্বফরহাদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (পুরুষ) , নাজিরহাট আহমদিয়া মাদ্রাসা,  সুয়াবিলের একটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার লাইনে রয়েছে ; যাদের অধিকাংশই মহিলা ভোটার ।

    কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ২২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে কেন্দ্র গুলোতে ভোটারদের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। কেন্দ্র গুলোতে পুরুষ ভোটারের চাইতে মহিলা ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। যার কারণে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে তাঁদের। লাইনে দাঁড়িয়ে বিরক্ত হয়ে অনেককে ভোট না দিয়ে ফিরে যেতেও দেখা গেছে।

    সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন দাবি করেন, ‘ শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘

    নির্বাচনে পৌর এলাকার ২২টি ভোট কেন্দ্রে প্রায় ৪৮ হাজার ৩৩৮ জন ভোটার তাঁদের ভোটারিধিকার প্রয়োগ করা করার কথা থাকলেও ভোট দিয়েছেন ২৬ হাজার ২৯৯ জন । ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ছিলো ২৫ হাজার ৬ শত ২৫ জন। আর মহিলা ভোটার ২২ হাজার ৭ শত ১৩ জন।

    ♦ ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বিজয়ী মেয়র প্রার্থী জাহেদ চৌধুরী ( নৌকা) ও আনোয়ার পাশা ( স্বতন্ত্র) ১৭ হাজার ৩১৬ ভোট পেয়েছেন যা মোট ভোটের ৬৫.৮৪ শতাংশ। দুইজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া অধিকাংশ  কাউন্সিলর পদে গতবারের কাউন্সিলররাই বিজয়ী হয়েছেন।♦

    এইবাংলা /তুহিন

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর