27 C
Dhaka
Wednesday, February 12, 2025
More

    ‘ ড. মাসুম চৌধুরী’ উপরে এক, ভেতরে আরেক রুপ

    আরও পড়ুন

    :: নিজস্ব প্রতিবেদক :::

    ড. মাসুম চৌধুরী -কখনো তিনি নিজের পরিচয় দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর উপদেষ্টা হিসেবে, কখনো কলামিস্ট কখনো শিক্ষাবিদ। শেয়ার বাজার কারসাজির অন্যতম আসামী এই মাসুম চৌধুরী শিক্ষিতের ছদ্মবেশ ধরে  । বিভিন্ন নামে কোম্পানি খুলে শেয়ার বিক্রির নামে গ্রাহকদের শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। তার এই প্রতারণায় নিঃস্ব হয়েছে অনেকেই। তার প্রতারণার ছক  থেকে রেহাই পায়নি নিজের আপন ভাই-বোনও।

    শেয়ারবাজার কারসাজিতে গত জানুয়ারি ১১ তারিখে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এর ট্রাস্টি সচিব বাদী হয়ে রাজধানীর  পল্টন থানায় মাসুম চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। বর্তমানে মামলা তদন্ত করছে সিআইডির ফিনানশিয়াল ক্রাইম টিম। বিষয়টি জানিয়েছেন ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ এর ট্রাস্টি সচিব সোহেল আহমেদ।

    জানা যায়,  মাসুম চৌধুরী ২০০৯ সালে Universal Financial Solution Ltd. (UFSL) নামে এসেট মেনেজমেন্ট কোম্পানি তৈরি করে। যেটাতে টানা ১৩ বছর পরিচালনা বোর্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বোর্ডের সবাই মিলে ১৫৮ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা জনগণ ও ৮ টি মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা ব্যাংকের থেকে তুলে বিদেশে পাচার করার জন্য। আর এইসব অভিযোগ এনে ১১ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা করা হয়।

    চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই মাসুম চৌধুরীর রয়েছে ভয়ঙ্কর বৈচিত্র্যময় প্রতারণার গল্প। নিজেকে প্রভাবশালী প্রমাণ করতে চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে ভারতে বেড়াতে যাবার ছবি নিজেই পাঠিয়েছেন বিভিন্ন জনের কাছে।

    তার ডক্টরেট ডিগ্রি সম্পর্কে  নিজের প্রবাসী ভাই মামুন চৌধুরী জানান, জীবনের প্রথম দিকে দাখিল পরিক্ষায় নকল করতে গিয়ে ধরা পড়ে বহিস্কৃত  হয়েছিলেন । তবে এরপরও বসে থাকেননি তিনি। এরপর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নকল সার্টিফিকেট নিয়ে নামের পাশে বসিয়েছেন ডক্টরেট ডিগ্রিও । বনেছেন কথিত অধ্যাপকও। কিন্তু এর সবই জাল।

    এইসব ভূয়া পদবী লাগিয়ে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে করছেন নানা ধরনের প্রতারণা। ভূয়া কোম্পানি খুলে মানুষের অর্থ আত্মসাৎ, শেয়ার বাজার কারসাজি, এমন কি তার প্রতারণা থেকে পরিবারের সদস্যদের রেহাই দেননি। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও।

    মাসুম চৌধুরী নামের এই প্রতারককে খুঁজছে আইন শৃঙখলা বাহিনী।একারণে  গা ঢাকা দিয়ে আছের দীর্ঘ দিন হতে। বন্ধ আছে তার ব্যক্তিগত মোবাইলের নম্বরটিও।

    মামুন চৌধুরী আরো বলেন, এর আগে এলিট ল্যান্ড লিমিটেড নামের একটি ভূয়া কোম্পানির নামে প্রতারণায় তার বিরুদ্ধে জারি হয়েছিলো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। পরে জামিনে আসেন।

    অনুসন্ধানে জানা যায়,  চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় র‍্যাংস ভবনের নিচতলায় পার্কিং ও ট্রাফিক পুলিশের রেস্টরুমকে কারসাজি করে টেন্ডার ছাড়াই নিজের দখলে নিয়ে দোকান বাণিজ্য চালিয়ে আসছে মাসুম চৌধুরী।মো. আনোয়ার নামের এক প্রবাসী চট্টগ্রামের খুলশী থানায় তার নামে মামলা করলে গ্রেফতারি পরোয়ানা হলে চট্টগ্রাম কোর্টে আগাম জামিন নেয়। যা এখনো হাইকোর্টে চলমান আছে।

    মামুন চৌধুরী বলেন, আমার সামাজিক কর্মকাণ্ডের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলা করে। মসজিদে দুই ভাই জুমার নামাজ পড়ে ফেরার সময় ১২/১৩ জন পেশাদার ঘাতকদের নিয়ে মাসুম চৌধুরী আমাকে বড় ভাই মাহফুজ চৌধুরীর সামনে প্রচণ্ড পরিমাণআঘাত জনিত কারণে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে মাঠিতে লুটিয়ে পড়লে বড় ভাই মাহফুজ চৌধুরী মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করান।

    এ ঘটনায় আমি কিছুটা সুস্থ হয়ে হাটহাজারী থানায় মাসুম চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে তার সঙ্গীদের নামে মামলা করি। কিন্তু সে মামলা থেকে অজ্ঞাত কারণে মাসুম চেীধুরীর নাম বাদ দেওয়া হয়। এছাড়া আমার অন্য চার ভাই-বোন এই মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় তাদেরকে গ্রামের পৈত্রিক ভিটাবাড়ি ছাড়া করেই ক্ষান্ত হননি। দিয়েছেন হত্যার হুমকিও।

    এতো কিছুর পরও  জনৈক রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় ধরা  ছোঁয়ার বাইরে আছেন কথিত ডক্টরেট ডিগ্রি অধিকারী ড. মাসুম চৌধুরী। মাসুম চৌধুরীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য ও বাইরের প্রতারিত সকল ভুক্তভুগীরা।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর