28 C
Dhaka
Monday, March 24, 2025
More

    মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় থাকা চীনা জেনারেল নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

    আরও পড়ুন

    ::: আন্তর্জাতিক ডেস্ক :::

    চীনের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে রবিবার জেনারেল লি শেংফুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি চীনা সেনাবাহিনী পিপল’স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-এর আধুনিকায়নে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

    আঞ্চলিক কূটনীতিকদের মতে, চীনা ব্যবস্থায় তার এই দায়িত্ব পাওয়া মোটাদাগে কূটনৈতিক ও আনুষ্ঠানিক। তবু তার অতীত কর্মজীবনের কারণে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে থাকবেন তিনি।

    এমন সময় লি শেংফু প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব নিচ্ছেন যখন বেইজিংয়ে সঙ্গে সামরিক সংলাপ ও যোগাযোগ প্রতিষ্ঠায় জোর দিচ্ছে ওয়াশিংটন। আগস্টে তৎকালীন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরে এই সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়।

    লি একজন টেকনোক্র্যাট। তিনি মহাকাশ প্রকৌশলী। কাজ করেছেন চীনের ভূ-উপগ্রহ কর্মসূচিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পিএলএ নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অন্তবর্তী লক্ষ্য বাস্তবায়নে লি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।

    সিঙ্গাপুরের এস. রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ-এর নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জেমস চার বলেন, পিএলএ ২০৪৯ সালের মধ্যে বিশ্বমানের একটি সামরিক শক্তি হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চায়। এই নিরিখে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে এমন আভিযানিক ও কারিগরি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লি শেংফুর দায়িত্ব পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

    ২০১৬ সালে তৎকালীন পিএলএল-এর অভিজাতবাহিনী স্ট্র্যাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স-এর উপ-কমান্ডারের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। এই বাহিনীর দায়িত্ব ছিল চীনের মহাকাশ ও সাইবার যুদ্ধের সামর্থ্য বৃদ্ধিতে গতি আনা।

    এরপর তিনি চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের সরঞ্জাম উন্নয়ন বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান। এই বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৭ সালে দশটি রুশ এসইউ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সরঞ্জাম কেনার কারণে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে ওয়াশিংটন।

    নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ কয়েকজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ বলছেন, ভবিষ্যতে ওয়াশিংটন-বেইজিং বৈঠকে সম্ভাব্য জটিলতা তৈরি করবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পাওয়া। এতে করে চীনের সামরিক নেতৃত্ব কিছু সুবিধা আদায় করতে পারবে।

    লি শেংফুর উত্থান সম্পর্কে গত সপ্তাহে পেন্টাগনের মুখপাত্র লে. কর্নেল মার্টি মেইনার বলেছিলেন, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত চীনের নেতৃত্ব বদলের প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করতে পারে না মার্কিন সেনাবাহিনী। কিন্তু পিএলএ-এর সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে আগ্রহের কথা স্পষ্ট করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী।

    মেইনার্স বলেন, যোগাযোগের সুযোগ উন্মুক্ত থাকলে ঝুঁকি প্রশমনে সহযোগিতা, ভুল বুঝাবুঝি এড়ানো এবং দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রতিযোগিতা ব্যবস্থাপনা করা যায়।

    স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির ফ্রিম্যান স্পগলি ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ-এর ওরিয়ানা স্কাইলার মাস্ত্রো বলছেন, চীন এই জটিলতা কাজে লাগিয়ে কূটনৈতিক সুবিধা আদায় করতে চাইবে। আলোচনায় বসতে চাইলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি তুলবে অথবা ইঙ্গিত দেবে যে, বেইজিং নয়, ওয়াশিংটন আলোচনায় আগ্রহী না।

    তার মতে, আলোচনা যুক্তরাষ্ট্রের সবসময়ের অগ্রাধিকার। কিন্তু চীন এটিকে ছাড় হিসেবে দেখে।

    কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনে লি শেংফুর দায়িত্ব পালন দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার সম্পর্ককেও সামনে হাজির করে। চীনা প্রেসিডেন্ট সামরিক বাহিনীতে নিজের প্রভাব আরও সুসংহত করেছেন।

    সূত্র: রয়টার্স

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর