25 C
Dhaka
Monday, March 24, 2025
More

    চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নতুন কমিটিকে ঘিরে জেগেছে আশা

    আরও পড়ুন

    নিজস্ব প্রতিবেদক :::

    চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ মাস যাবত কমিটি ছাড়া স্থবির হয়ে যাওয়া  চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন আহবায়ক কমিটি নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা নতুন এই কমিটিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। 

    দীর্ঘ পাঁচ মাস নেতৃত্বহীন থাকার পর অবশেষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র এই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলো। নতুন আহ্বায়ক কমিটিতে পটিয়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান  আলহাজ্ব ইদ্রীস মিয়াকে আহবায়ক ও লায়ন মো. হেলাল উদ্দিনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।  আজ রোববার ( ২ ফেব্রুয়ারি) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচ সদস্যের আহবায়ক  কমিটি গঠনের বিষয়টি জানানো হয়।

    দক্ষিণ জেলা বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, টানা ৬ বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটিতেই বন্দি ছিল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির রাজনীতি। বিপরীতে জেলার মতো ৮টি উপজেলা ও পৌরসভারও চলছে আহ্বায়ক কমিটি নির্ভর বিএনপির রাজনীতি। এতে দলটির চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ে সাংগঠনিক কার্যক্রমে হ য ব র ল অবস্থা সৃস্টি হয়।

    গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট এলাকার একটি ওয়্যারহাউস থেকে একে একে ১৪টি বিলাসবহুল গাড়ি বের হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। আলোচিত-সমালোচিত শিল্প গ্রুপ এস আলমের গাড়িগুলো পার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে দক্ষিণ জেলা বিএনপির তখনকার তিন নেতার বিরুদ্ধে। তাঁরা হলেন আগের কমিটির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক ও সদস্য মামুন মিয়া। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ওই তিন নেতাকে দল থেকে শোকজ করা হয়। পরে তাঁদের তিনজনের প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। অভিযুক্ত ওই নেতাদের কাউকে পদে রাখা হয়নি।

    সংকটে দলের হাইকমান্ড আস্থা রেখেছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়ার উপর।  পটিয়া উপজেলা পরিষদের সবচেয়ে জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইদ্রিস মিয়াকে। আহবায়ক হিসেবে দলের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ নেতাকে বেছে নিয়েছে দলটি। এছাড়া লায়ন হেলাল উদ্দিন আনোয়ারা উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব ছিলেন। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার হওয়া লায়ন হেলালকে দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব করা হয়েছে। অবশ্য এরআগেই তার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিলো।

    জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আলী আব্বাসকে পুনরায়  সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। সাবেক যুগ্ম আহবায়ক লেয়াকত আলীকে আবারও যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে।  এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি প্রয়াত জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে বিএনপি নেতা মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পাকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে।

    জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন বলেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চেয়েছেন নতুন নেতৃত্বে এমন রাজনৈতিক ব্যক্তি আসুক যারা সত্যিকারের সাচ্চা শহীদ জিয়ার আদর্শের কর্মী। এবং যারা বিগত ১৭ বছরে দলের আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। নতুন আহবায়ক কমিটিতে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা বিগত দিনের আন্দোলন  সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তৃণমূলের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে নতুন আহবায়ক কমিটিতে। ‘

    নতুন আহবায়ক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতৃত্বের প্রশ্নে যে উত্তেজনা এবং বিতর্ক তৈরি হয়েছিলো সেটি দুর হলো। এই কমিটি দলের ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা যেসব দাবি করছেন, তা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ‘

    দলটির নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের হাইকমান্ড যাদের ওপর আস্থা রেখেছেন, তারা কীভাবে দলের সংকট মোকাবেলা করবে, তা আগামী দিনের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। তৃণমূলের প্রত্যাশা, নতুন নেতৃত্ব দলের জন্য সঠিক পথ নির্দেশ করবে এবং দক্ষিণ চট্টগ্রামের রাজনীতিতে বিএনপিকে আরো শক্তিশালী করবে।

    প্রসঙ্গত,  দলের তিন নেতার বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে এস আলম গ্রুপের গাড়ি সরিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠার পর গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর বিলুপ্ত করা হয়েছিলো দক্ষিণ  জেলা বিএনপির ওই সময়ের আহবায়ক কমিটি। এছাড়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০০৯ সালে। সে কমিটিতে জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি এবং শেখ মো. মহিউদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। এরপর ২০১১ সালে পুনর্গঠন করা হয় এবং জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি এবং গাজী শাহজাহান জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই কমিটি দীর্ঘ আট বছর পাঁচ মাস দায়িত্ব পালন করার পর ২০১৯ সালের অক্টোবরে বিলুপ্ত করেন কেন্দ্রীয় কমিটি।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর