::: নাদিরা শিমু :::
সীমা রি রোলিং মিলের অক্সিজেন প্লান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় শ্রমিক ও এলাকাবাসী হতবিহ্বল। হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনেছেন আশপাশের এলাকাবাসী। খানিক সময় পরে জানাজানি হয় বিস্ফোরণের ঘটনা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় জনে৷ আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
বিষ্ফোরক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা না হলে অক্সিজেন প্লান্টের ‘অক্সিজায়ার’ বিস্ফোরণ ঘটার বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। লোহা বা স্টিলের মতো ধাতু পোড়াতে আদর্শ উপায় হিসেবে এটি একটি গুঁড়োতে পিষে, কোনও অক্সিজায়ার মধ্যে মিশ্রিত করা হয়- যাতে এটি তাপ এড়াতে না পারে। এরপরে একটি উচ্চ তাপমাত্রার ইগনিশন ডিভাইস প্রয়োগ করে ধাতুকে পোড়ানো হয়।
আহত শ্রমিকরা জানান, ‘ ওভার হিটের কারণে গ্যাসের সিলিন্ডার বিষ্ফোরিত হয়েছে। অক্সিজেনের এসব সিলিন্ডার মুলত জাহাজ কাটা শিল্পে ব্যবহৃত হয়। বিস্ফোরণের ভয়াবহতায় বিস্ফোরণ স্থানের পাশে থাকা দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়। হতাহত হয় অনেকেই। ‘
প্রত্যক্ষদর্শিরা জানান, বিষ্ফোরনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের জাহাজগুলো কেটার জন্য গ্যাস ও অক্সিজেনের প্রয়োজন। আয়রন এবং স্টিলের অংশগুলি কাটার জন্য, শ্রমিকরা অক্সিজেন জ্বালানী মশাল ব্যবহার করেন। প্রোপেন, বুটেন এবং প্রাকৃতিক গ্যাস তরল বা সংক্রামিত অক্সিজেনের সাথে ব্যবহার করা হয় যা অক্সিজায়ার হিসাবে কাজ করে।
ইস্পাত ও রি রোলিং শিল্প খাতের সাথে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশে রডের চাহিদা গড়ে ৮০ লাখ টন। এর অধিকাংশই তৈরি হয় রি-রোলিং সেক্টর থেকে। আমাদের দেশে আকরিক বা ক্র্যাপ থেকে লৌহার এই বাড়তি চাহিদা মেটানো হয়। লৌহা দ্বারা প্রয়োজনীয় দ্রব্য তৈরির জন্য লৌহাকে গলিয়ে বিভিন্ন আকৃতি দিতে হয়। ১৫৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় লৌহা গলানোর কাজে অক্সিজায়ারকে ব্যবহার করা হয়। ফলে যে ফার্নেস লৌহা গলানোর কাজ হয় তার বাইরে ৬০-৬৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপ থেকে।