:::আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:::
সময় তখন সকাল সাড়ে ৮টা। নাটোর শহর থেকে বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌর শহরের নিজ কার্যালয়ে মোটরসাইকেল যোগে যাচ্ছিলেন আকিজ সিমেন্টের বিক্রয় কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম (৩২)। যাবার পথে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের কারবালা এলাকায় পোঁছালে দুইটি সাদা প্রাইভেটকার আকস্মিক তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে।
কিছু বুঝে উঠার আগেই পিস্তল ঠেকিয়ে চারজন তার হাতে হ্যান্ডকাপ পড়িয়ে সামনে থাকা প্রাইভেটকারের উঠিয়ে নেয়। পেছনের প্রাইভেটকার থেকে দুইজন নেমে তার মোটরসাইকেল (হোন্ডা ১১০ সিসি) নিয়ে দ্রত পাবনার দিকে চলে যায়। এরপর কিছু লক্ষ্য করার আগেই চোখ ও মুখ বেধে ফেলে তারা। ভুক্তভোগীর বুঝতে বাকী রইলো না যে তাকে কিডন্যাপ করা হয়েছে। মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করলেও ২৫ হাজার টাকা করে তিনবার বিকাশে টাকা প্রদান করার পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে চোখ বাধা অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয় পাবনার কালিকাপুর এলাকার পরিত্যক্ত একটি গোডাউনের কাছে নির্জন আমবাগানের ভিতর।
পরে ঐ অবস্থায় বের হয়ে স্থানীয় এক রাজমিস্ত্রির সহায়তায় তিনি ফিরে আসেন বনপাড়া কর্মস্থলে। পুলিশকে জানানো হয বিস্তারিত ঘটনা। তবে উদ্ধার হওয়ার ৩০ ঘন্টা পার হলেও এ ব্যাপারে এখনও মামলা রেকর্ড হয়নি।
এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক জানান, ঘটনা সম্পর্কে জেনেছি। এ ব্যাপারে ব্যাপক অনুসন্ধানে নেমেছে জেলা পুলিশ। শীঘ্রই মামলা রুজু করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে । ‘
জানা গেছে, অপহরণের শিকার নজরুল ইসলামের বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছায়। অপহরণকারীরা তার ব্যবহৃত ২টি দামী মোবাইলও ছিনিয়ে নিয়েছে।
এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে বনপাড়ার দিকে আসার সময় পেছন থেকে দুইটি সাদা প্রাইভেটকার আমার মোটরসাইকেল গতিরোধ করে। পেছনের প্রাইভেটকারে ক’জন ছিলো তা জানি না। তবে আমাকে যে প্রাইভেটকারে উঠানো হয়েছিলো সেখানে চালকসহ ৪ জন ছিলো। তারা সাধারণ পোশাকে থাকলেও গায়ে ইংরেজীতে র্যাব লেখা হাতাকাটা কোট (কটি) ছিলো। তারা গাড়িতে উঠানোর পর হ্যান্ডকাপ খুলে দেয়। পরে ব্যাটারি চালিত মেশিন দিয়ে শক্ দিয়ে আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায়। এছাড়াও হাতের কনুই দিয়ে তারা আমার বুকে বার বার আঘাত করে। পায়ে বড় স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে ঘন ঘন আঘাত করে। আমি সিংড়ার এক ব্যবসায়ীর কাছে ফোন করে মাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে এখনই টাকা লাগবে বলে ২৫ হাজার টাকা ও বাড়ীতে ফোন করে চাকুরীতে টাকা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে বলে দুই বারে ৫০ হাজার টাকা তাদের বিকাশে পাঠাই। তারা পাবনার রূপপুরে গাড়ি থামিয়ে টাকাগুলো বিকাশ থেকে উঠিয়ে নেয়। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালিকাপুর আমবাগানে আমাকে ফেলে রেখে যায়।
নজরুল আরও জানান, ওখান থেকে বনপাড়া নিজ কর্মস্থলে আসার পর রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ করি। থানা পুলিশ এ ব্যাপারে রাতেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালায়। তবে শেষ শেষ পর্যন্ত কি হয়েছে তা আমার জানা নেই।