::: নিজস্ব প্রতিবেদক :::
আদমশুমারী অনুযায়ী জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশে নারীদের সংখ্যা বেশি হলেও ভোটার তালিকায় নারীদের সংখ্যা পুরুষের তুলনায় কম। নির্বাচন কমিশন (ইসি) হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। নারীদের সংখ্যা কম হবার কারণে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
দেড় দশকের মধ্যে দেশে এবার সর্বোচ্চসংখ্যক ভোটার বাড়লেও তালিকায় নারীদের সংখ্যা কম । এছাড়া জনসংখ্যার চেয়ে ভোটার বৃদ্ধির হারও এবার অনেক বেশি। অন্যদিকে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা কম।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় ভোটার দিবসে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন (২ মার্চ বা গতকাল পর্যন্ত) মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন, নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন এবং হিজড়া সম্প্রদায়ের ভোটার ৮৩৭ জন। অর্থাৎ পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা ১৭ লাখ ৪০ হাজার ৮৪৫ জন কম। অথচ ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, দেশে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা ১৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩৮২ জন বেশি।এসব ভোটার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ঠিকমতো ভোটার তালিকা হালনাগাদ না করায় অনেক নারী ভোটার বাদ পড়েছেন।
মোট সংখ্যার পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন।
এ ছাড়া হালনাগাদ তালিকায় তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয়ে ৮৩৭ জন ট্রান্সজেন্ডার ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।ইসির তথ্য অনুযায়ী, ভোটার বৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দেশে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটার বেশি ছিল। কিন্তু এখন পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের সংখ্যা কম। এখন মোট ভোটারের প্রায় ৫১ শতাংশ পুরুষ আর ৪৯ শতাংশ নারী।বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, দেশে মোট পুরুষের চেয়ে নারী ২ লাখ কম। কিন্তু ভোটার তালিকায় পুরুষের চেয়ে নারী কম ২০ লাখ ৯২ হাজার।
মৃতদের বাদ দেওয়ার পরও এবার ভোটার বেড়েছে ৫৮ লাখ ৬৪ হাজার ৪৩০ জন। এবার ভোটার বেড়েছে গত বছরের চেয়ে প্রায় চার গুণ। গত বছর বেড়েছিল ১৫ লাখ ৬৬ হাজার জন।
ভোটার বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, করোনার সময় অনেকে ভোটার হতে পারেননি। তাঁরা পরে ভোটার হয়েছেন। এ ছাড়া করোনা-পরবর্তী সময়ে প্রবাসীদের অনেকে দেশে এসে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত জনশুমারি অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। আর ইসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে যেখানে ১ দশমিক ২২ শতাংশ হারে, সেখানে ভোটার বাড়ছে ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ হারে।
যদিও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সঙ্গে ভোটারের হার সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান।