:::জেড এ মিনার :::
ভারতের শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকেও খালাস পেয়েছেন সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার ( ২৮ ফেব্রুয়ারী) শিলং দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ রায় দেন। এই রায়ের ফলে দেশে ফিরতে আর কোন বাঁধা নেই বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন আহমেদের আইনজীবী।
এরআগে ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর মামলা থেকে খালাস পান তিনি। এ রায়ের ৫ মাস পর মেঘালয়ের সরকার পক্ষে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। এ আপিলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর আইনী লড়াই শেষে আবারো খালাস পেলেন তিনি। ফলে দেশে ফিরতে তার আর কোন আইনী বাধা নেই।
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমেদ দৈনিক এই বাংলাকে বলেন, ‘ দীর্ঘদিন দেশ থেকে বাইরে আছি, দেশে ফিরতে আইনী জটিলতা ছিলো। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং জজ আদালতের আপিল বিভাগ দেশে ফেরার বিষয়ে আগের রায় বহাল রেখেছেন। দেশে ফিরতে তার কোনো বাধা নেই। শিগগিরই দেশে ফিরতে চাই। তবে বাকিটা আইনি প্রক্রিয়া ও দেশটির সরকারের ওপর নির্ভর করছে ।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ‘আত্মগোপন’ থাকা অবস্থায় রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে ‘আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী’ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘ ৬২ দিন গুম থাকার পর ১১ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরের গলফ কোর্স মাঠের পাশে অসুস্থ অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তির সহায়তায় তিনি পুলিশের হেল্প লাইনে ফোন করলে পুলিশ প্রথমে তাকে থানায় ও পরে মিমহামস নামের একটি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাংলাদেশে বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে সেখান থেকে সিভিল হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সিভিলে সপ্তাহখানেক রাখার পর তার অবস্থার অবনতি হলে শিলং-এর বিশেষায়িত হাসপাতাল নিগ্রিমসে ভর্তি করা তাকে। সুস্থ হওয়ার পর জামিন পেলে শিলং শহরের বিষ্ণপুর সানরাইজ গেষ্ট হাউজে অবস্থান করে আইনি লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তিনি। দীর্ঘ ৪ বছর আইনি লড়াইয়ের পর বেকসুর খালাস পান তিনি। ২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হলেও কয়েকদফা সময় পিছিয়ে ওই বছরের ২৬ অক্টোবর আদালতের রায়ে অনুপ্রবেশের দায়ে করা মামলায় নির্দোষ হিসেবে রায় পান তিনি।
এ রায়ের ৫ মাস পর মেঘালয়ের সরকার পক্ষে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। এ আপিলের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর আইনী লড়াই শেষে আবারো খালাস পান তিনি। এবার দেশে ফিরতে আর কোন আইনী বাধা নেই।
সালাহউদ্দিন আহমদ ১৯৯১ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস হিসেবে নিয়োগ পান। দীর্ঘ ৫ বছর দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৯৬ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে আবারো রাজনীতিতে সক্রিয় হন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমদ। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-১ আসন প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর টানা ৩ বার এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এসময় তিনি পেকুয়া প্রতিষ্ঠা সহ কক্সবাজার জেলায় কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেন। পরে ওয়ান ইলাভেনের সময় তিনি কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তার স্ত্রী এডভোকেট হাসিনা আহমদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সালাহউদ্দিন গুম হবার সময় বিএপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন এবং শিলং নির্বাসনে থাকা অবস্থায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।