:::নাদিরা শিমু :::
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যদের তৎপরতা বেড়েছে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের খুঁজে বের করতে। এরমধ্যে চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে চারজন জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তারা সবাই নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
চট্টগ্রাম নগরীতে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘ আটককৃতরা ইতোমধ্যে সশস্ত্র প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। জঙ্গিবাদের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তথাকথিত হিজরতের নামে তারা এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।’
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানের ফলে নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্য পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় থেকে বের হয়ে সমতলে আত্মগোপনে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এই তথ্যের ভিত্তিতে গত রাতে র্যাব অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার তাদেরকে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
আটক চারজন হলেন পটুয়াখালীর দশমিনা এলাকার ২২ বছর বয়সী হোসাইন আহমদ, কুমিল্লা সদরের ২২ বছর বয়সী আল আমিন, খুলনার ডুমুরিয়া এলাকার ২১ বছর বয়সী আল আমিন ওরফে পার্থ কুমার দাশ এবং কুমিল্লা সদরের ১৯ বছর বয়সী নেহাল আব্দুল্লাহ।
এদিকে, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে আটক ৪৯ জঙ্গিকে রাঙ্গামাটি আদালতে হাজির করা হয়েছে । এদের মধ্যে ৫ জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত । ৪৪ জনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘ গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে জামাতুল আনসারের ৪৯ জন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা ও সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব৷ এদের মধ্যে কুমিল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া আট তরুণের মধ্যে চারজন রয়েছেন৷’
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘‘আমরা এখন আমির, দাওয়াতি শাখার প্রধান, অর্থ শাখার প্রধানদের মত প্রধানদের আইনের আওতায় আনতে পারিনি। তবে এখন পর্যন্ত যাদের আটক করা হয়েছে তাদের বক্তব্য অনুযায়ী কোনো এক সময় দেশের অভ্যন্তরে একটি সশস্ত্র হামলার পরিকল্পনার কথা তাদের বলা হয়েছে৷ তাদের বলা হয়েছে যে, ‘তোমরা প্রশিক্ষণ নাও, যখন আমরা বলব তখন সশস্ত্র হামলার জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’ আমরা বোমা বিশেষজ্ঞদের আটক করেছি, যারা বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছি। আটকদের বক্তব্য থেকে অনুমেয় যে আমিরের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরে কোথাও নাশকতা বা বোমা হামলার একটা পরিকল্পনা তাদের মধ্যে ছিল।’’
সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন জানান, যে ৫৫ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, তারা মূলত তিনটি ধাপে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে যায়। প্রথম ধাপে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১২ জনের একটি দল প্রশিক্ষণে যায়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের নভেম্বরে ৩১ জনের একটি দল তথাকথিত হিজরতের নামে কুকি চীন প্রশিক্ষণ সেন্টারে (কেটিসি) প্রশিক্ষণ নিতে যায়। এরপর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আরও ১২ জনসহ মোট ৫৫ জন তিন ধাপে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে যায়। এই ৫৫ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৩১ থেকে ৩২ জনকে শনাক্তের দাবি করেছে র্যাব।
এরআগে গত ৭ই ফেব্রুয়ারী বান্দরবানে নতুন জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ৫ সদস্যকে আটক করা হয়েছিলো।