আন্তর্জাতিক ডেস্ক :::
দক্ষিণ তুরস্কে আবারও আঘাত হেনেছে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প। এখন পর্যন্ত আটজন আহত হবার খবর দিয়েছে সিএনএন। সুনামির সতর্কতা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪ মিনিটে দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায় প্রদেশে এ ভূমিকম্প হয়।
তুরস্কের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা এএফএডি এ তথ্য জানিয়েছে। হাতায় প্রদেশের দেফনে শহরে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর ২০০ কিলোমিটার উত্তরের আনতাকিয়া ও আদানা শহরে এএফপির সাংবাদিকেরা ভূমিকম্প অনুভব করেছেন।হাতায় প্রদেশের রাজধানী শহর আন্তাকিয়া ও ইস্কেন্দারুনে রাতের বেলায় ভূমিকম্পে লোকজন রাস্তায় নেমে আসে। শহর দুটিতে কিছু ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
তুরস্কের হাতায় প্রদেশের বন্দর নগরী ইস্কেন্দারুনে সোমবার রাতের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে বেশ কিছু ভবনও।
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান যে আফটারশকের পরে আটজন আহত হয়েছে। তিনি যোগ করেছেন, সুনামির সতর্কতা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমাদের হাসপাতালে আটজন আহত ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হয়েছে৷ তিনি জনসাধারণকে তাদের জিনিসপত্র নেবার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ না করতে অনুরোধ করেছেন।
দুই সপ্তাহ আগে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প রীতিমতো তুলকালাম কাণ্ড ঘটিয়ে যায় তুরস্কে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৪৪ হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে এখন পর্যন্ত। ওই ভূমিকম্পে শুধু তুরস্কেই এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ভবন বিধ্বস্ত হয়।১৯৩৯ সালের পর ৮৪ বছরে এমন ভূমিকম্প দেখেনি তুরস্ক। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) বলছে, ১৯৩৯ সালেও তুরস্কের পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেসময় অন্তত ৩৩ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে দেফনে জেলায় সরকারি উদ্ধারকাজের ধীরগতির ব্যাপক অভিযোগ উঠেছিল।
জর্জিয়া টেক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব আর্থ অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্সেসের সহকারী অধ্যাপক কার্ল ল্যাং সিএনএনকে বলেছেন, সোমবার যে এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে, ওই এলাকায় ভূমিকম্পের প্রবণতা অনেক। সোমবারের ভূমিকম্পটি সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পগুলোর চেয়ে অনেক শক্তিশালী।
বিশ্বের সবচেয়ে ভূকম্পনপ্রবণ এলাকাগুলোর মধ্যে একটি তুরস্ক। দেশটির অবস্থান সেখানে, যেখানে সক্রিয়ভাবে গতিশীল বেশ কয়েকটি টেকটোনিক প্লেট একত্রিত হয়েছে। ভূতাত্ত্বিকদের মতে, আরবীয়, ইউরেশিয়ান ও আফ্রিকান প্লেট দ্বারা বেষ্টিত আনাতোলিয়ান টেকটোনিক প্লেটে তুরস্ক অবস্থিত। তুরস্কের সিসমিক ম্যাপ অনুযায়ী, এই প্লেটগুলোর গতিবিধি এখন পর্যন্ত সক্রিয় হওয়ায় দেশে প্রায়ই ভূমিকম্প সংঘটিত হয়।