নিজস্ব প্রতিবেদক :::
ফান্ড সংকটে রোহিঙ্গাদের সম্প্রতি সহায়তা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। এমন খবরে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গারা।
শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানিয়েছেন, সহায়তা কমানোর প্রভাব হবে বিধ্বংসী।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ডব্লিউএফপি প্রথমবারের মতো সহায়তার পরিমাণ কমানোর ঘোষণা দেয়। সংস্থাটি জানায়, রোহিঙ্গাদের আগামী মার্চ থেকে মাসিক ভাতা ১২ ডলারের বদলে ১০ ডলার করে দেয়া হবে। যদি তহবিলে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে তাহলে এপ্রিল থেকে সহায়তার পরিমাণ আরও কমবে। রোহিঙ্গাদের জন্য যে তহবিল গঠন করা হয়েছে সেখানে প্রায় ১২৫ মিলিয়ন ডলার ঘাটতি থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাদের। ২০১৭ সাল বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে এ সংস্থাটি।
সহায়তার পরিমাণ কমানোর খবর শুনে রোহিঙ্গা নেতা সায়েদুল্লাহ বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমরা বুঝতে পারছি রোহিঙ্গাদের প্রতি বিশ্বের নজর কমছে। কিন্তু ডব্লিউএফপি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে শরণার্থী শিবিরে মানবিক বিপর্যয়ের পথ সুগম হবে।
সলিমুল্লাহ নামের অপর এক নেতা বলেছেন, সহায়তার পরিমাণ কমার বিষয়টি শরণার্থী শিবিরে অপরাধ বাড়িয়ে দেবে। যাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নারী ও শিশুরা। এটি হবে একটি বিধ্বংসী আঘাত। শরণার্থী শিবিরে সন্ত্রাসবাদ, মাদক এবং মানব পাচার বৃদ্ধি পাবে।
যেসব রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বসবাস করেন তাদের বাইরে কোথাও কাজ করার সুযোগ নেই। ফলে বেঁচে থাকতে তারা পুরোপুরি মানবিক সহায়তার ওপরই নির্ভরশীল।
ডব্লিউএফপি বলছে, শরণার্থী শিবিরে থাকা রোহিঙ্গা শিশুদের প্রতি ৮ জনের একজন অপুষ্টিতে ভুগছে। এছাড়া গর্ভবতী ও বুকের দুধ খাওয়ানো ৪০ শতাংশ মা রক্ত স্বল্পতায় ভুগছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলছে, উন্নত জীবনের আশায় শরণার্থী শিবির থেকে অনেক রোহিঙ্গা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে অন্য কোনও দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যার মধ্যে গত বছরই এমন ঝুঁকি নিয়েছেন প্রায় ২ হাজার রোহিঙ্গা।