28 C
Dhaka
Monday, April 28, 2025
More

    মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থী নির্যাতনের নেপথ্যে

    আরও পড়ুন

    খান মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ::

    চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্ররাজনীতিকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের দুই গ্রুপ দীর্ঘদিন থেকে মুখোমুখি। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাসির উদ্দিন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেয়া দুই পক্ষই ক্যাম্পাস প্রভাব বিস্তারে মরিয়া৷ সর্বশেষ গতকাল শুক্রবারে চার ছাত্রকে রুম থেকে ডেকে নিয়ে টর্চার সেলে শিবির সন্দেহে বেধড়ক পিটুনি দিয়েছে ছাত্রলীগের একটি পক্ষের নেতারা৷

    নির্যাতনের শিকার চার শিক্ষার্থী হলেন- জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল, সাকিব হোসেন, এম এ রায়হান, মোবাশ্বির হোসেন শুভ্র। তারা সবাই ৬২তম ব্যাচের ছাত্র। এদের মধ্যে জাহিদ হোসাইন ওয়াকিল এবং সাকিব হোসেনকে নিবিড় পরিচর্যা বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাদের অবস্থা বর্তমানে সংকটমুক্ত।

    শিবির সন্দেহে টর্চার সেলে নিয়ে রাতভর নির্যাতনের শিকার হওয়া চার ছাত্র এমন ঘটনার বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেননি। শুক্রবার সকালে সহপাঠীদের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর গণমাধ্যম তৎপর হবার কারণে দুজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা চমেক হাজির হন।

    নির্যাতনের শিকার হওয়া চার ছাত্রের সহপাঠীরা জানান, চারজনই কোন রাজনৈতিক দলের কর্মী নন। ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সুত্র জানায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কমেন্টকে কেন্দ্র করে এমন নির্যাতন চালানো হয়েছে।

    সুত্রটি জানিয়েছে, আর্থিক অস্বচ্ছতার কারণে একটি কোচিং সেন্টারে মাঝেমধ্যে ক্লাস নেন নির্যাতনের শিকার হওয়া একজন মেডিকেল ছাত্র। সেই ক্লাস নিয়ে ইতিবাচক কমেন্ট করে ওই কোচিং সেন্টারের একজন। সেই মন্তব্যের জের ধরে শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত এমন অজুহাত তৈরি করে তাকে বেধড়ক পিটুনি দেয়া হয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুললে বুয়েটের শিক্ষার্থী আববারের পরিণতি হবে বলে হুমকিও দেয়া হয়। ‘

    চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৪ শিক্ষার্থীকে শিবির আখ্যা দিয়ে ছাত্রাবাসের রুম থেকে ডেকে নিয়ে রাতভর নির্যাতন করে কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এদের মধ্যে দুইজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই ঘটনায় জড়িতরা এর আগে বিভিন্ন সময়ে মারামারিতে জড়িয়ে বহিষ্কৃত ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী বলে পরিচিত।

    বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের রুম থেকে এই মেডিকেল শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নির্যাতন করা হয়।

    জানা যায়, ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা বলে পরিচিত অভিজিৎ দাশ, রিয়াজুল জয়, জাকির হোসেন সায়াল, মাহিন আহমেদ ও ইব্রাহিম সাকিবের নেতৃত্বেই এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে অভিজিৎ ও জয় দুজনই ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় আড়াই বছরের জন্য বহিষ্কৃত। তবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তারা হোস্টেল ও ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।

    জানা যায়, বুধবার রাত প্রায় একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান হোস্টেলের বি ব্লকের ৮বি নাম্বার রুম থেকে এম এ রাইয়ান ও মোবাশ্বির আহমেদ শুভ্রকে এবং সি ব্লকের ৩ সি নাম্বার রুম থেকে জাহিদ হোসেন ওয়াকিল ও সাকিব হোসেনকে অতর্কিতভাবে ডেকে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতা জাকির হোসেন সায়াল, ইব্রাহীম সাকিব, মাহিন আহমেদ, জুলফিকার মোহাম্মদ শোয়েব। তারপর তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় রিয়াজুল ইসলাম জয় ও অভিজিৎ দাশ (যাদের বহিষ্কারাদেশ এখনো বহাল আছে) এর টর্চার সেলে। রাতভর সেখানে তাদের ওপর অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের পর সকালবেলা হাসপাতালে না নিয়ে মোবাইল কেড়ে নিয়ে রুমে আটকে রাখা হয়।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    - Advertisement -spot_img

    সবশেষ খবর