আল আমিন,নাটোর প্রতিনিধি:-
চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষায় নাটোরে নবাব সিরাজ-উদ্-দৌলা সরকারি কলেজে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজ সকালে কলেজ অডিটোরিয়মে এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জহিরুল ইসলাম। পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আহবায়ক প্রফেসর আব্দুল লতিফ মিয়ার সভাপতিত্বে কলেজ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল বারী মির্জা, প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলমসহ অধ্যাপকবৃন্দ।
অধ্যক্ষ প্রফেসর জহিরুল ইসলাম জানান, বাঙ্গালীর হাজার বছরের ঐতিহ্য এই শীতের পিঠা। এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে পারস্পরিক হৃদ্যতা ও সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে এই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এই ঐতিহ্যকে ধারণ করে লালন করে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে ১৪ টি স্টলের মাধ্যমে এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এই স্টলগুলোতে প্রায় দুইশ’ প্রকারের পিঠা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ইচ্ছা অনুযায়ী প্রতি বছর এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হবে। অপর এক অধ্যাপক জানান এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পিঠার নাম জানবে, স্বাদ উপভোগ করবে। আর এর মাধ্যমে গ্রামবাংলার এই ঐতিহ্য টিকে থাকবে।
আয়োজক শিক্ষার্থীরা জানান, গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে পিঠা উৎসব হতো। কিন্তু দিনে দিনে এই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রামে এখন আর সেই দৃশ্য দেখা যায়না। এটা ধরে রাখতে কলেজ থেকে এই পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছে । যেখানে তাদের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের অংশ গ্রহনের মাধ্যমে ৪২ আইটেমের পিঠা তৈরী করা হয়েছে। আরো বিভিন্ন রকমের পিঠা তৈরী করা হচ্ছে। যারা কলেজে পড়াশুনা করে তাদের অনেকেই পিঠাগুলোর নাম জানেনা। এই পিঠা উৎসবের মাধ্যমে তারা এসব পিঠার নাম জানতে পারছে। স্টলগুলোতে রয়েছে পাটিসাপটা, গোলাপ কুড়ি, গাজর পিঠা, সূর্যমুখিসহ নানা রকমের পিঠা । শিক্ষকদের কাছে তাদের দাবী এই পিঠা উৎসব যেন প্রতি বছর করা হয়।
পিঠা উৎসব দেখতে আসা দর্শকরা জানান, তারা ভাবতে পারেননি যে, এই পিঠা উৎসবে এত ভীড় হবে। স্টলে স্টলে গিয়ে দেখেছেন যে যার মত সৃজনশীলতা দেখানোর সুযোগ পেয়েছে। পিঠাগুলো শুধু দেখতে নয় স্বাদেও বেশ ভাল । এ ধরণের উদ্যোগ প্রতি বছর নেওয়া হবে এমনই দাবী তাদের। তাদরে মা ও চাচীরা বাসায় এক দুই রকমের পিঠা তৈরী করে । কিন্তু এখানে অনেক রকমের পিঠা রয়েছে। খেতেও বেশ ভাল। এছাড়া অনেক রকম পিঠার সাথে তারা পরিচিত হতে পেরেছেন। এখানে ভাপা পিঠা, নকশী পিঠা সহ অনেক রকম পিঠা রয়েছে। তারা এই পিঠা উৎসবে এসে বেশ খুশি।